সবংয়ে সংখ্যালঘু সম্মেলনে সোমেন মিত্র ও মানস ভুঁইয়া। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
নেতার অভাবেই অনুন্নয়নের শিকার হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা-বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের ‘গড়’ বলে পরিচিত সবংয়ে এমনই মন্তব্য করলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র। এ দিন সবংয়ে ব্লক কংগ্রেসের ডাকা সংখ্যালঘু প্রতিনিধি সম্মেলনে সোমেনবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া, জাতীয় কংগ্রেসের সম্পাদক মইনুল হক, জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া, ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অমল পণ্ডা প্রমুখ। সভায় তৃণমূল ও বিজেপি সরকারের ধর্ম নিরপেক্ষতার নীতি নিয়ে সরব হয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। সোমেনবাবু বলেন, “নেতা হওয়ার সময় যাঁরা সংখ্যালঘুদের স্বার্থ দেখবে বলেছিলেন, তাঁরাই পরে বলেছেন আমি ধর্মনিরপেক্ষ। ৩৪ বছরের বাম সরকারের সময়েও একই জিনিস হয়েছে।”
সম্মেলনে বিজেপিকে দুষে বিধায়ক মানস ভুঁইয়া বলেন, “ভারতবর্ষের মাটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির। এখানে কংগ্রেস আমলে বরাবর আত্মবলিদান দিয়ে তা রক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু বিজেপির আমলে সেটা কতটা রক্ষা করা হবে তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।” রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “এই রাজ্যের সরকার মুখে বড় বড় কথা বলে কিন্তু সাড়ে তিন বছরেও সংখ্যালঘুদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির কাজ সঠিক ভাবে হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, “সিপিএমের আমলেও যে খুন হয়েছিল তার মধ্যে অধিকাংশ সংখ্যালঘু। এই তিনবছরেও একই পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।”
বধর্মানের মতো একটি ঘটনায় একটি সম্প্রদায়ের দিকে কালি ছেটানো উচিত নয় বলে মনে করেন সোমেনবাবু। সভা শেষে দলের নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাংসদ শিশির অধিকারীর করা মন্তব্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সোমেনবাবু বলেন, “কলকাতার উপকন্ঠে পরমা আইল্যান্ড, চিটফান্ড, বন্দরে দুর্নীতি হচ্ছে মনে করে আমি তদন্ত করতে বলেছিলাম। শিশির অধিকারী দলের কর্মী থেকে উঁচুতলা পর্যন্ত সর্বস্তরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলছেন। একটা দলের ভিতরে থেকে যদি কোনও প্রবীণ নেতা দলের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন, তখন দলের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা উচিত।” এই পরিস্থিতিতে শিশিরবাবুর তৃণমূলে থাকার প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়েছিল সাংসদ আসনের থেকে আত্মসম্মান বড় কথা, তাই তৃণমূল থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। কেউ যদি ভাবেন সাংসদ আসনের সঙ্গে আত্মসম্মানের আপোস করতে পারবেন তিনি দলে থাকবেন।” তাঁর আরও বক্তব্য, “আরাবুল সমস্ত ব্লকে আছে। আরাবুলের মতো দক্ষ সংগঠক নাকি দলে প্রয়োজন, তাই আরাবুলদের জন্ম হচ্ছে। তাঁকে দল থেকে বাদ দিলেই শুদ্ধিকরণ হয় না। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”