সার্ভার-সঙ্কটে দেরি, মুখ্য ডাকঘরে গ্রাহক বিক্ষোভ

টানা দু’মাস পরিষেবা ব্যাহত মেদিনীপুর জেলা মুখ্য ডাকঘরে। ভোগান্তির শিকার সাধারণ গ্রাহকরা। টাকা জমা দেওয়া বা তোলা দু’ক্ষেত্রেই দীর্ঘ সময় লাগছে। একজনের টাকা জমা বা তোলার ক্ষেত্রেই ১৫ মিনিট থেকে আধঘণ্টা সময় লাগছে। এক এক জন গ্রাহককে কাজ মেটাতে ন্যূনতম আড়াই ঘন্টা দাঁড়াতে হচ্ছে। কখনও কখনও ঘণ্টা পাঁচেক সময় লাগছে। সব থেকে সমস্যায় পড়ছেন পেনশন তুলতে আসা বয়স্করা। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। সোমবার সিনিয়র পোস্ট মাস্টারকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান গ্রাহকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০২
Share:

মেদিনীপুর শহরের পঞ্চুরচকে জেলার মুখ্য ডাকঘরে গ্রাহকদের লম্বা লাইন। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

টানা দু’মাস পরিষেবা ব্যাহত মেদিনীপুর জেলা মুখ্য ডাকঘরে। ভোগান্তির শিকার সাধারণ গ্রাহকরা। টাকা জমা দেওয়া বা তোলা দু’ক্ষেত্রেই দীর্ঘ সময় লাগছে। একজনের টাকা জমা বা তোলার ক্ষেত্রেই ১৫ মিনিট থেকে আধঘণ্টা সময় লাগছে। এক এক জন গ্রাহককে কাজ মেটাতে ন্যূনতম আড়াই ঘন্টা দাঁড়াতে হচ্ছে। কখনও কখনও ঘণ্টা পাঁচেক সময় লাগছে। সব থেকে সমস্যায় পড়ছেন পেনশন তুলতে আসা বয়স্করা। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। সোমবার সিনিয়র পোস্ট মাস্টারকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান গ্রাহকেরা। সিনিয়র পোস্ট মাস্টার বিকাশ কান্তি মিশ্র বলেন, “সার্ভারের জন্য সমস্যা হচ্ছে। এতে গ্রাহকদের অসুবিধে হচ্ছে এটা ঠিক। যান্ত্রিক ত্রুটি দ্রুত মেরামত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি।”

Advertisement

দু’মাস ধরেই সমস্যা চলছে মেদিনীপুর জেলা মুখ্য ডাকঘরে। গোড়া থেকেই এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এজেন্টরা। কারণ, এজেন্টদের মাধ্যমেই বেশিরভাগ গ্রাহক রেকারিং ডিপোজিট করেন। তাঁরাই গ্রাহকদের টাকা নিয়মিত জমা দেন। কিছু ক্ষেত্রে গ্রাহকরা নিজেরা আসেনন। এজেন্টরা এক সঙ্গে একাধিক গ্রাহকের টাকা জমা দেন বলে সাধারণ গ্রাহকের কাজ মেটার পরে, তাঁদের সুযোগ দেওয়া হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়ছেন তাঁরাই। বারবার টাকা জমা দিতে এসেও পারেননি এমন এজেন্টের সংখ্যা প্রায় ৯০০ জন। এক এজেন্টের কথায়, “মানুষকে বুঝিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলিয়েছি। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে টাকা জমা না দিতে পারলে তাঁরা খারাপ ভাববেন। আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হবে। তাঁরা তো এই সমস্যা বুঝবেন না। তাই বরেবারে সমস্যা সমাধানের জন্য তাগাদা লাগিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি।”

সোমবার মেয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে এসেছিলেন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ। তিনি বলেন, “দশটাতেই ঢুকেছি। সাড়ে ১২টাতেও দেখি লাইন এগোচ্ছে না। এক জনের টাকা তোলার পর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে টাকা না তুলেই বাড়ি ফিরছি। মেয়ে-জামাই বাইরে থাকে। কালই চলে যাবে। কী সমস্যা বলুন তো?”

Advertisement

ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে তৈরি হয়েছিল সার্ভার। ডাকঘরের নীচের ৮টি কাউন্টারের যাবতীয় নথি সেখানে তোলা হয়। এ ছাড়া দোতলার সেভিংস ব্যাঙ্কের যাবতীয় নথিও এই সার্ভারে ওঠে। ক্রমে অ্যাকাউন্টের সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু ২০০৫ সালের পর থেকে সার্ভারের মানোন্নয়ন বা সংস্কার কিছুই হয়নি। মাস দু’য়েক হতে চলল, কাজ করতে চূড়ান্ত সমস্যা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে ঊর্ধ্বতন মহলের পাশাপাশি সমস্যার কথা জানানো হয়েছে সেই সংস্থাকে, যারা সার্ভার বসিয়েছিল। কিন্তু সুরাহা হয়নি। ডাকঘর কর্মীদের কথায়, “শুধু গ্রাহকেরাই নন, হেনস্থা হচ্ছি আমরাও। যান্ত্রিক ত্রুটিতে কাজ হচ্ছে না। আর গ্রাহকেরা আমাদের উপর বিষোদ্গার করছেন।” সিনিয়ার পোস্ট মাস্টার বলেন, “সব জানিয়েই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছি। আশা করি, এ বার দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement