বীরভূমের নানুরের থুপসার অঞ্চলের আতকুলা গ্রামে খাসির মাংস-ভাত প্রায় ৪০০ গ্রামবাসীকে খাওয়ানো হল। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় দু’বছর জেলে থাকার পর অবশেষে তিহাড় জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই শুক্রবার বিকেল থেকে উৎসবে মেতেছেন বীরভূম জেলার তৃণমূল কর্মীরা। বিভিন্ন জায়গায় উড়েছে সবুজ আবির, বিতরণ করা হয়েছে সবুজ রসগোল্লা। জামিনের খুশিতে এলাকা গমগম করল ‘খেলা হবে’ গানে। পাশাপাশি, বীরভূমের নানুরের থুপসার অঞ্চলের আতকুলা গ্রামে খাসির মাংস-ভাত প্রায় ৪০০ গ্রামবাসীকে খাওয়ানো হয়েছে।
সিবিআইয়ের পর গরু পাচার-কাণ্ডে ইডির মামলাতেও জামিন পেয়েছেন অনুব্রত। দীর্ঘ দু’বছর ধরে জেলে থাকার পর অবশেষে জামিন হল অনুব্রতের। কয়েক দিন আগে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন অনুব্রত। তার পর শুক্রবার ইডির দায়ের করা মামলায় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে ১০ লক্ষ টাকার বন্ডের বিনিময়ে জামিন পান তিনি। দুই মামলাতেই জামিন পেয়ে তিহাড় জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন কেষ্ট। সেই খুশিতে আতকুলা গ্রামে খাওয়াদাওয়ার আসর বসে। তালিকায় ছিল ভাত, খাসির মাংস, আলুর তরকারি, দই ও পাঁপড়।
প্রায় দু’বছর বীরভূম অনুব্রতহীন। অনুব্রতের জামিনের খবর পেয়ে দুর্গাপুজোর আগেই উৎসবে মেতেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলার অনেক তৃণমূল নেতা-কর্মীই তাঁকে ‘অভিভাবক’ মনে করেন। তাঁর তিহাড়-মুক্তির খবরে উচ্ছ্বসিত বীরভূমের তৃণমূল। শুক্রবার অনুব্রতের জামিনের খবর পাওয়ার পর থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সবুজ রঙের রসগোল্লা বিলি করা হয়েছে। উড়েছে সবুজ আবিরও। শুধু বীরভূম নয়, ‘অকাল হোলি’তে মেতেছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামও।
বীরভূমে তৃণমূলের ‘শেষ কথা’ অনুব্রত গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই নিচুপট্টির বাড়িতে নেমে আসে বিষণ্ণতা। অনুব্রতের স্ত্রী গত হয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে। ফলে বোলপুরের নিচুপট্টিতে কেষ্টর বাড়ি থাকে তালাবন্ধ। এত দিন ওই বাড়ি ছিল সুনসান। শুক্রবার সেই ছবি পাল্টাল। অনেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক, অনুগামীদের দেখা গেল ‘দাদা’র বাড়ির সামনে।
গত বছর গরু পাচার মামলায় ইডির হাতে অনুব্রতের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলও গ্রেফতার হন। গত মঙ্গলবার তিহাড় জেল থেকে জামিন পান সুকন্যা। তাঁর জামিনের খবর পেয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন সুকন্যার বাবা, তৃণমূল নেতা অনুব্রতের অনুগামীরাও। সুকন্যার জামিনের খুশিতে ওই দিনও খুশ মেজাজে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল কর্মীদের। গ্রামে সকলকে মুরগির মাংস খাওয়ানো হয়। এ বার অনুব্রতের জামিনের খুশিতে আতকুলা গ্রামে খাসির মাংস দিয়ে গ্রামবাসীদের খাওয়ানো হল।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১১ অগস্ট গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল সিবিআই। আসানসোলের জেল হয়ে তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন অনুব্রত। পরে একই মামলায় ইডি গ্রেফতার করে তাঁর মেয়ে সুকন্যাকেও। তাঁরও ঠাঁই হয় তিহাড়ে। সেখান থেকে বেশ কয়েক বার তিনি জামিনের আবেদন করেছেন। তবে, তা মঞ্জুর হয়েনি। সেই মামলাতেই গত মঙ্গলবার দিল্লি হাই কোর্ট শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেছে সুকন্যার।