বিপুলকুমার হাজারি।—নিজস্ব চিত্র।
ক্যাম্পের ভিতরে এক সিআরপি অফিসারের গুলিবিদ্ধ দেহ মিলল। বুধবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের জামবনি থানা এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বিপুলকুমার হাজারি (৪৬) সিআরপি-র ১৮৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর ছিলেন। সিআরপি কর্তাদের দাবি, সহকর্মীর একে-৪৭ বন্দুক থেকে নিজের উপর গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ওই অফিসার। তবে মৃতের পরিবারের প্রশ্ন, বিপুলবাবু কীভাবে একে ৪৭ বন্দুক থেকে নিজের বুকের দিকে তাক করে গুলি করলেন? ওই ব্যাটালিয়নের কম্যান্ডান্ট পরেশনাথ বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমাদের সন্দেহ এটি আত্মহত্যার ঘটনা। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।”
বিপুলবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সিআরপি ক্যাম্পে রেডিও অপারেটরের কাজ করতেন বিপুলবাবু। তাঁর আদি বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানার বাঁশদা গ্রামে। তবে ঝাড়গ্রাম শহরে তাঁর একটি বাড়ি রয়েছে। সেখানে বিপুলবাবুর স্ত্রী মধুমিতা হাজারি দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন। মধুমিতাদেবী ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের নার্স। বিপুলবাবু ছুটি পেলে ঝাড়গ্রামের বাড়িতে আসতেন। সিআরপি-র ১৮৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের কম্যান্ডান্ট পরেশনাথ জানান, এ দিন দুপুর পৌনে দু’টো নাগাদ ব্যারাকের একটি ঘর থেকে আচমকা পর পর স্বয়ংক্রিয় বন্দুকের গুলির আওয়াজ শুনতে পান ক্যাম্পের জওয়ানেরা। তাঁরা ছুটে গিয়ে দেখেন ওই এএসআই নিজের ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে রয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সিআরপি সূত্রের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, উর্দি পরে ক্যাম্পের রেডিও অপারেটিং রুমে তথ্য আদান প্রদানের কাজ করছিলেন বিপুলকুমার। দুপুর বেলা ক্যাম্পের ব্যারাকে নিজের ঘরে গিয়েছিলেন বিপুলবাবু। ওই ঘরে তখন কেউ ছিলেন না। সেখানে সহকর্মী এক জওয়ানের একে-৪৭ বন্দুকটি রাখা ছিল। সম্ভবত, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকেই নিজের বুকের উপর বন্দুকটির ট্রিগার টিপে দেন বিপুলবাবু। ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসা গুলির মধ্যে কয়েকটি লাগে তাঁর বুকে। সিআরপি কর্তারা অবশ্য ঘটনার স্পষ্ট কোনও কারণ জানাতে পারেন নি। এ দিন হাসপাতালে বিপুলবাবুর মৃতদেহ দেখতে আসেন সিআরপি-র ডিআইজি বি ডি দাস। এ দিন পরে জামবনির ওই ক্যাম্পটিও পরিদর্শন করেন ওই সিআরপি কর্তা।
এ দিন হাসপাতালে বিপুলবাবুর স্ত্রী মধুমিতাদেবী কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “কেন এমন হল আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। ওঁনার কোনও রকম মানসিক অবসাদ ছিল না। তবে কর্মক্ষেত্রে আমার স্বামীকে মানসিক চাপ দেওয়া হত বলে মাঝে মাঝেই আমার কাছে উনি বলতেন।”