হলদিয়ায় মেহদি। নিজস্ব চিত্র।
প্রথম দিকে বাড়ির কথা বললেই ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকত বছর কুড়ির ছেলেটি। এখন অবশ্য মনে পড়েছে মা, বাবা, বোনের কথা। আর বারবার বলছে কোচবিহারে নিজের গ্রামের কথা! তাতে আস্থা রেখেই হলদিয়ার ব্রজলালচকের বাসিন্দারা চাইছেন এ বার নিজের ঘরের সন্ধান পাক মেহদি।
মাস চারেক আগে ব্রজলালচকের কাছেই দেখা মেলে মেহদির। মানসিক ভারসাম্যহীন এই যুবকের প্রাথমিক ভাবে সেবা করেন শেখ সারফুদ্দিন নামে এক দোকানদার। তিনি উদ্যোগী হয়ে চিকিৎসাও করান ওই যুবকের। পুলিশকে জানাননি কেন? স্থানীয়দের জবাব, প্রথমে পুলিশকে জানানোর কথাই হয়। সেই মতো ভবানীপুর থানায় গেলে পুলিশ দুর্ব্যবহার করে বলেই অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য তা অস্বীকার করেছে।
ইতিমধ্যে এলাকাবাসীর কাছের হয়ে ওঠে মেহদি। বাসিন্দাদের উদ্যোগে সে সুস্থও হয়। স্থানীয়রা জানান, কিছুটা সুস্থ হওয়ার পরে মেহদিকে তার বাড়ির কথা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুই বলতে পারেনি সে।
হঠাৎ একদিন স্থানীয় এক বাসিন্দার কাছে মেহদি জানায়, সে কোচবিহারের তিন বিঘার বাসিন্দা। মায়ের নাম মরজিনা বিবি, বাবা মিজানুর, বোনের নাম টুকু। মেহদির কথা অনুযায়ী তার বাবা সেলাই মেশিন চালান, আর কাকারা চাষের কাজ করেন। আর এটা মনে পড়ার পর থেকেই নিজের বাড়িতে ফিরতে চাইছে মেহদি। কী ভাবে কোচবিহার থেকে সে এসে পৌঁছলো হলদিয়ায়? অনেক ভেবে মেহদির জবাব, “আমাকে বাসের কন্ডাক্টর নামিয়ে দিয়েছিল। তারপর আর কিছু মনে নেই।”
স্থানীয়রা জানান, ওই যুবকের হাতে দাগ দেখে মনে হয়েছিল, তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হত। হলদিয়া পেট্রোকেমের কর্মী রেজাউল খান বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি তিন বিঘায় যোগাযোগ করতে। কিন্তু প্রশাসনিক সহযোগিতা চাই। মেহেদির ঠিকানা পেলে আমরা ওকে বাড়িতে রেখে আসব।” যুবকটিকে বাড়ি ফেরাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন হলদিয়ার মহকুমাশাসক শঙ্কর নস্করও। তিনি বলেন, “আমি হলদিয়ার বিডিওকে বিষয়টি জানিয়েছি। ওই যুবকের ছবি-সহ তথ্য নিয়ে কোচবিহার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করব।”