বিমল খুনে পাঁচ অভিযুক্তের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ

খাবার দোকানের কর্মী বিমল মাহাতোকে খুনের উদ্দেশ্যেই তাঁর মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে একাধিক বার আঘাত করা হয়েছিল। তদন্তের সূত্রে ধৃত অভিযুক্তকে জেরা করে এমনই দাবি পুলিশের। বিমলবাবুকে মারধর করে খুনের ঘটনার আরও কয়েকজন অভিযুক্ত গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০০:১৬
Share:

খাবার দোকানের কর্মী বিমল মাহাতোকে খুনের উদ্দেশ্যেই তাঁর মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে একাধিক বার আঘাত করা হয়েছিল। তদন্তের সূত্রে ধৃত অভিযুক্তকে জেরা করে এমনই দাবি পুলিশের। বিমলবাবুকে মারধর করে খুনের ঘটনার আরও কয়েকজন অভিযুক্ত গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ঘটনার পরে বিমলবাবুর ভাইপো তথা দোকানের মালিক প্রদীপ মাহাতো দশজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম থানায় এফআইআর দায়ের করেন। পুলিশের অবশ্য দাবি, ওই দশ জন ছাড়াও আরও কয়েকজন লোহার রড ও লাঠি দিয়ে বিমলবাবুকে বেধড়ক মারধর করেছিল। ঘটনার সময় বিমলবাবুর ভাইপো প্রদীপ মাহাতো বাকি হামলাকারীদের পরিচয় জানতে পারেন নি। পুলিশ সূত্রের দাবি, বিমল হত্যায় ধৃত অভিযুক্ত বছর কুড়ির লক্ষ্মণ সরেনকে জেরা করে এ ব্যাপারে আরও নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। অভিযুক্তকে জেরা করে পুলিশের আরও দাবি, বিমলবাবুর মৃত্যু নিশ্চিত করতেই ভাঙা টেবিলের পায়া দিয়ে তাঁর মাথায় একাধিক বার আঘাত করা হয়েছিল।

Advertisement

বুধবার অরণ্যশহর থেকে লক্ষ্মণকে ধরা হয়। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক ছিল। বৃহস্পতিবার লক্ষ্মণকে ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। এ দিন জেলবন্দি আরও চার অভিযুক্ত শান্তনু মজুমদার, জগন্নাথ হাঁসদা, রাজা মজুমদার ও শুকচাঁদ নস্করকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিশ। তদন্তকারী অফিসার আদালতে জানান, হামলার ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধারের জন্য এবং ঘটনায় জড়িত বাকি অভিযুক্তদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য লক্ষ্মণ ও জেলবন্দি চার অভিযুক্ত-সহ পাঁচ জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা প্রয়োজন। পাঁচ অভিযুক্তকে দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানা এলাকায় চাহিদা মতো সিগারেট না পেয়ে খাবার দোকানটির মালিক প্রদীপ মাহাতোকে মারধর করে একদল স্কুল-কলেজ পড়ুয়া। ভাইপো প্রদীপবাবুকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন বিমলবাবু। পরে এসএসকেএমে তাঁর মৃত্যু হয়। মারধরের মামলায় দশ অভিযুক্তের মধ্যে ৯ অভিযুক্ত আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়। প্রথম থেকেই গা ঢাকা দেয় লক্ষ্মণ। পরে মামলায় খুনের ধারা যুক্ত করে পুলিশ। জামিনপ্রাপ্ত ৯ অভিযুক্তের মধ্যে ৬ অভিযুক্তের জামিন বাতিল করে তাদের জেল হাজতে পাঠায় আদালত। এক নাবালক অভিযুক্তের জামিন বাতিলের জন্য এখনও সিদ্ধান্ত নেয় নি জুভেনাইল আদালত। জামিনপ্রাপ্ত বাকি দুই অভিযুক্তের মধ্যে অমিত দাস আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। সৌম্যদীপ মজুমদার নামে আর এক জামিনপ্রাপ্ত অভিযুক্ত অসুস্থ হয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন। পরে তদন্তের সূত্রে গত ৩ মার্চ সুদীপ প্রতিহার নামে এক পলিটেকনিক ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সুদীপের নাম অবশ্য এফআইআর-এ ছিল না।

Advertisement

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মিনি চিড়িয়াখানা এলাকায় ওই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ও তাদের সঙ্গীরা নিয়মিত যাতায়াত করত। সেখানে আসামাজিক কাজকর্মও করত তারা। এই ছেলেগুলি এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে, স্থানীয়রা কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পেতেন না। ঘটনার দিন চাহিদামতো সিগারেট না পেয়ে তারা প্রদীপবাবুকে গালিগালাজ করেছিল। প্রদীপবাবু প্রতিবাদ করেছিলেন বলে, পরে দলভারী করে এসে ওই যুবকেরা দোকানে চড়াও হয়ে ভাঙচুর ও মারধর করেছিল। ভাইপোকে বাঁচাতে ছুটে এলে বিমলবাবুকে টেবিলের ভাঙা পায়া দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল। অভিযুক্তদের জেরা করে পুলিশ সূত্রের দাবি, মৃত্যু নিশ্চিত করতেই বিমলবাবুর মাথায় একাধিকবার ওই কাঠের ভারী পায়া দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement