বাবুলই এখন বিজেপি-র প্রচারের মুখ

বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক হয়েও ভোট-বাজারে খোলনলচে বদলে আপাদমস্তক রাজনৈতিক দলের প্রার্থী তিনি। অন্য জন, প্রার্থী হয়েও টলিউডের এক নম্বর নায়কের ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে রাজনীতির খোলা মাঠে শেষ প্রচারেও স্বচ্ছন্দ নন। প্রথম জন সম্পর্কে তাঁর সম্পর্কে বিরোধীরাও কবুল করছেন, বাস্তবের মাটিতে ‘চ্যালেঞ্জ’ নিতে জানেন। অন্য জন সম্পর্কে দলীয় কর্মীরা বলছেন, “উনি ‘রংবাজ’ হয়েও পর্দার বাইরে রাজনীতির আঙিনায় বড্ড নরম-সরম।”

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৪ ০১:৩৩
Share:

ঘাটালে প্রচারে বাবুল সুপ্রিয়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক হয়েও ভোট-বাজারে খোলনলচে বদলে আপাদমস্তক রাজনৈতিক দলের প্রার্থী তিনি।

Advertisement

অন্য জন, প্রার্থী হয়েও টলিউডের এক নম্বর নায়কের ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে রাজনীতির খোলা মাঠে শেষ প্রচারেও স্বচ্ছন্দ নন।

প্রথম জন সম্পর্কে তাঁর সম্পর্কে বিরোধীরাও কবুল করছেন, বাস্তবের মাটিতে ‘চ্যালেঞ্জ’ নিতে জানেন। অন্য জন সম্পর্কে দলীয় কর্মীরা বলছেন, “উনি ‘রংবাজ’ হয়েও পর্দার বাইরে রাজনীতির আঙিনায় বড্ড নরম-সরম।”

Advertisement

সুপ্রিয় বড়াল, ওরফে, বাবুল সুপ্রিয়। এবং দীপক অধিকারী, জনপ্রিয় নাম দেব।

পাক্কা চল্লিশ দিন ধরে ঠা-ঠা রোদ্দুর ভেঙে নিজের কেন্দ্র আসানসোল চষে বেড়িয়েছেন। রাস্তায় নেমে বিরোধীদের সঙ্গে বচসাতে জড়িয়েছেন। রাত দুপুরে থানায় গিয়ে পুলিশের জেরা সামলেছেন। বিজেপি-র প্রার্থী হয়ে, শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্রমাগত লড়াই করে নিজের জনপ্রিয়তায় তবু চিড় ধরতে দেননি। ভোটের দিনও বুথে গিয়ে তাই তৃণূলের পোলিং এজেন্টের কাছে গান গাওয়ার আব্দার শুনতে হয়েছে তাঁকে।

বাবুলের সেই জনপ্রিয়তায় থাবা বসাতে আসানসোলে প্রচারে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দেবের। শেষ পর্যন্ত তিনি অবশ্য গিয়ে উঠতে পারেননি। তবে নিজের কেন্দ্রে নির্বাচন ফুরোতেই বাবুলই ছুটে এসেছেন দেব-এর কেন্দ্রে। আগামী সোমবার সেখানে ভোট। শনিবার বিজেপি প্রার্থী মহম্মদ আলমের হয়ে প্রচারে ঘাটাল চষে বেড়ালেন বাবুল। সেখানে আগাগোড়া রাজনৈতিক বক্তব্য রাখার পাশাপাশি দু কলি গানও গাইলেন বাবুল।

কেশপুরের মহিষদা গ্রামে দেব। ছবি: কিংশুক আইচ।

দুপুর থেকে ঘাটালে। জেলপুকুর মাঠে কখনও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে বাবুল প্রশ্ন তুলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ‘ভাষা’ নিয়ে। কখনও সোচ্চার হয়েছেন সারদা কাণ্ড নিয়ে। প্রায় বিনা নোটিসেই এসেছিলেন। তবু বাবুল এসেছেন শুনে প্রায় প্রতিটি সভাতেই ছিল চোখে পড়ার মতো ভিড়। অন্য দিকে, এ দিন কেশপুর এলাকায় ঘুরে বেড়ানো দেব-এর সভায় তেমন ভিড় কোথায়? এ দিন সাতটি সভা করেন দেব। শোলিডিহা থেকে মহিষদাতে। যে গ্রাম থেকে তাঁর প্রথম নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়েছিল। সেই গ্রামীণ সভায় সমাগমও সাকুল্যে শ’দেড়েক। দু’মিনিটের বক্তব্যে দেব সেখানে বলেন, “কেশপুর দিয়েই প্রচার শুরু করেছিলাম। সেখানেই প্রচার শেষ করছি। এর থেকে বোঝা যাবে কেশপুরকে কতটা ভালবাসি।’’

দুই তারকার অন্য জনের সভায় ছবিটা একেবারে উল্টো। ঘাটাল থেকে চপারে তমলুকে উনে গিয়ে রাজনীতির কারবারিদের চেনা সুরে মমতাকে খোঁটা দিয়ে বাবুল যখন বক্তব্য রাখছেন তখন মাঠ উপচে পড়ছে। আবার বসিরহাটের মাঠেও তাঁকে দেখতেই ভিড় ভাঙছে মাঠে। পুলিশের হিসেব বলছে, এ দিন তমলুকের কাকগাছিয়া কিংবা বসিরহাটের সবুজসঙ্ঘের মাঠেও প্রায় হাজার সাতেক দশজ্ঞককে মাতিয়ে দেন তিনি।

তবে কটূক্তি নয়, পরস্পরকে বরং প্রশংসাই করছেন দুই জনপ্রিয় নায়ক।

বাবুল সুপ্রিয় বলছেন, “মুম্বইতেই দেবের সঙ্গে আমার পরিচয়। ভাল অভিনয় করে। ওঁর অভিনয় দেখুন। কিন্তু ভোটটা দেবেন বিজেপিকে।” আর বাবুল তাঁর এলাকায় প্রচারে এসেছেন শুনে দেব বলছেন, “ভাল তো। ওঁকে স্বাগত।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement