নন্দীগ্রামে মিছিল-সভা, প্রচার শুরু সিপিএমের

অবশেষে নন্দীগ্রামে প্রচার শুরু করল সিপিএম। তবে খাস নন্দীগ্রাম নয়, শনিবার নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের কিছু এলাকায় মিছিল করেন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী ইব্রাহিম আলি। সঙ্গে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা দলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রবীন দেব। নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের সাত বছর পরেও এলাকায় যথেষ্ট কোণঠাসা সিপিএম। নন্দীগ্রামের ভিতরে এখনও তাদের সভা-সমাবেশ করার মতো অবস্থা নেই। তাই জেলার অন্যত্র প্রচার শুরু হলেও নন্দীগ্রামে এতদিন কোনও প্রকাশ্য কর্মসূচি হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৫১
Share:

বাজারে জনসংযোগ ইব্রাহিমের। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

অবশেষে নন্দীগ্রামে প্রচার শুরু করল সিপিএম। তবে খাস নন্দীগ্রাম নয়, শনিবার নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের কিছু এলাকায় মিছিল করেন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী ইব্রাহিম আলি। সঙ্গে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা দলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রবীন দেব।

Advertisement

নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের সাত বছর পরেও এলাকায় যথেষ্ট কোণঠাসা সিপিএম। নন্দীগ্রামের ভিতরে এখনও তাদের সভা-সমাবেশ করার মতো অবস্থা নেই। তাই জেলার অন্যত্র প্রচার শুরু হলেও নন্দীগ্রামে এতদিন কোনও প্রকাশ্য কর্মসূচি হয়নি। সম্প্রতি নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের কর্মীদের নিয়ে কর্মিসভাও করতে হয়েছে নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকার বাইরে, চণ্ডীপুর বাজারে। এ দিনও যে সব এলাকায় সিপিএম প্রার্থী যান, তা নন্দীগ্রামের প্রাণকেন্দ্র নয়। তবে ইব্রাহিম বলেন, “শীঘ্রই আমরা নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় প্রচারে যাব।”

এ দিন সিপিএমের প্রচারে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। এলাকায় মোতায়েন ছিল নন্দীগ্রাম থানার ওসি কাশীনাথ চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রায় ৩০ জনের পুলিশ বাহিনী। পুলিশি সক্রিয়তার কথা মেনে নিয়ে এ দিন ঘোলপুকুর বাজারে প্রচারের সময় রবীনবাবু বলেন, “দীর্ঘদিন পর আমরা নন্দীগ্রামে প্রচার শুরু করলাম। লোকজনের এখনও ভয়-ভীতি আছে। তবে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসন এখন নির্বাচন কমিশনের আওতায় থাকায় সহযোগিতা করছে।”

Advertisement

তমলুকের বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য নন্দীগ্রামবাসীর ভয়-ভীতির কথা মানতে নারাজ। উল্টে তাঁর যুক্তি, “নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি যে পুরোদস্তুর স্বাভাবিক রয়েছে, এ দিন সিপিএমের নির্বিঘ্ন প্রচারই তার প্রমাণ। এতদিন ওরা সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগ করত।” শুভেন্দুবাবু এ দিন প্রচার সারেন তমলুকে। বিকেলে রাধামণি থেকে মানিকতলা পর্যন্ত পদযাত্রা করেন তিনি।

অন্য দিকে, সিপিএম প্রার্থী ইব্রাহিম এ দিন সকাল থেকে বিকেল নন্দীগ্রাম-২ ব্লকেই পড়েছিলেন। বিভিন্ন বাজার ও গ্রামের রাস্তায় ঘুরে ঘুরে প্রচার চালান তিনি। রবীন দেব ছাড়াও সঙ্গে ছিলেন সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধান, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহি, নির্মল জানা, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সিপিএম নেতা অশোক বেরা প্রমুখ। সকাল ৯টা নাগাদ বিরুলিয়া এলাকার শিবরামপুর বাজার থেকে শুরু হয় ট্যাবলো নিয়ে প্রচার। দোকানদার ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন বাম প্রার্থী। শোনেন তাঁদের নানা অভাব-অভিযোগ। এরপর মিছিল এগোয় দু’কিলোমিটার দূরে ঘোলপুকুর বাজারের দিকে। হাটবার হওয়ায় ঘোলপুকুর বাজারে ভিড় ছিল ভালই। ফলে, জনসংযোগ সারেন ইব্রাহিম। এই সময়ই হাটের দোকানদাররা ইব্রাহিমের দিকে এগিয়ে দেন তরমুজ, শসা, ডাব। এরপর প্রচার গাড়ি যায় খোদামবাড়ি-২ পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগরে। বয়াল এলাকার তেরপেখ্যা বাজার থেকে প্রচার চালিয়ে আশদতলা, জয়নপুর আমড়াতলিয়া হয়ে রেয়াপাড়ায় যান ইব্রাহিম।

এ দিন রবীনবাবু বলেন, “গত কয়েকটি নির্বাচনে নন্দীগ্রামের মানুষের রায় আমাদের পক্ষে যায়নি। কিন্তু এই ক’বছরে নন্দীগ্রামের মানুষ কী পেয়েছেন, তা তাঁরা ভাল করে জানেন। আশা করছি ভোটবাক্সে তার প্রতিফলন পড়বে।” প্রচারে ইব্রাহিম অভিযোগ করেন, “নন্দীগ্রামে শিল্পায়নে বাধা দিয়েছিল তৃণমূল। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের আমলে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলেও উন্নয়ন থমকে গিয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলছে। মহিলাদের নিরাপত্তায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।” এই পরিস্থিতিতে তমলুক কেন্দ্রে জনমত তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবে বলেও দাবি করেন সিপিএম প্রার্থী।

ফুটবলে উৎসাহ দিতে

শনিবার সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি।

নতুন প্রজন্মকে ফুটবলে উৎসাহ দিতে তাদের সঙ্গে মাঠে নামলেন এক সময়ের তারকা ফুটবলার অতনু ভট্টাচার্য, অলোক মুখোপাধ্যায়, বিকাশ পাঁজি, তুষার রক্ষিত, মইদুল ইসলামরা। মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতনের পড়ুয়ারা অবশ্য ২ গোলে হেরে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement