নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় হাজিরা দিতে তমলুকে এসে ফের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-সহ সিপিএম নেতৃত্বকে আক্রমণ করলেন সিপিএমের বহিষ্কৃত নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ লক্ষণ শেঠ। বৃহস্পতিবার তমলুক জেলা আদালত চত্বরে বুদ্ধবাবুকে কটাক্ষ করে লক্ষ্মণবাবু বলেন, “উনি একজন নার্সিসিস্ট। যিনি নিজের গুণে, নিজের রূপে নিজেই মুগ্ধ। আর অন্য সকলকে মনে করেন কুৎসিত আর অসৎ। নাহলে নেতাই-কাণ্ডে আমাদের ছেলেরা ভুল করেছে বলেন। তার মানে ওঁর কোনও দোষ নেই। কোন দিন হয়তো বলে বসবেন নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে লক্ষ্মণ শেঠরাই দোষী।” গত ৪ মে নিমতৌড়িতে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভায় বুদ্ধবাবু নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছিলেন। নন্দীগ্রাম নিয়ে সিপিএমের পদক্ষেপ যথাযথ নয় বলে এ দিন অভিযোগ করেছেন তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ। লক্ষ্মণবাবুর কথায়, “নন্দীগ্রাম নিয়ে তৃণমূল শহিদ দিবস পালন করছে। শুভেন্দু অধিকারী ১৩০ ফুটের শহিদ মিনার বানিয়েছেন। অথচ নন্দীগ্রামে ওদের চেয়ে আমাদের অনেক বেশি সমর্থক মারা গিয়েছে।” পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ বুদ্ধবাবুকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলেও এ দিন দাবি করেন লক্ষ্মণবাবু। তাঁর কথায়, “অবাক হওয়ার কিছু নেই যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান। কারণ কংগ্রেস নিজে হয়তো সরকার গড়তে চাইবে না। কিন্তু বিজেপিকে ঠেকাতে অন্য কোনও দলের নেতা-নেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাইরে থেকে সমর্থন করতে পারে। কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাইরে থেকে সমর্থন করতে পারে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হলে তৃণমূল সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে আর বামপন্থী আন্দোলনের ক্ষতি হবে বলেও জানান লক্ষ্মণবাবু। এ বার লোকসভার নির্বাচনে তিনি ভোট দেবেন না বলেও জানান লক্ষ্মণবাবু। আর তার কারণ ব্যাখা করে বলেন, “আদালতের নির্দেশে আমি এখন জেলার বাইরে আছি। ভোট দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি প্রয়োজন। আবেদন জানাতে অনেক খরচ। এত টাকা খরচ করে আবেদন করব না।”
নন্দীগ্রাম-নিখোঁজ মামলায় চার্জগঠন নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ৩১ জুলাই। নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেতা সমর মাইতি খুনের ঘটনায় প্রায় ৩ মাস জেল হেফাজতে থাকার পর জামিনে মুক্ত সিপিএম নেতা অশোক গুড়িয়াও এ দিন নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় জেলা আদালতে হাজিরা দেন। লক্ষ্মণবাবুর সঙ্গে দেখাও করেন তিনি।