মেদিনীপুরে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।
আগামী ১৯ ডিসেম্বর খড়্গপুরে এসে সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার পরপরই মেদিনীপুরে এসে সভা করবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “আমরা আগেই জানিয়েছিলাম উনি (মুখ্যমন্ত্রী) যে দিন জেলায় এসে সভা করবেন, তারপরই জেলায় রাহুল সিংহের সভা হবে। রাহুলদার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ২২ কিংবা ২৩ ডিসেম্বর উনি মেদিনীপুরের বুকে সভা করবেন। তৃণমূলনেত্রী যা বলবেন, রাহুলদা তারই জবাব দেবেন।”
গত সেপ্টেম্বরে মেদিনীপুরে রাহুলবাবুর সভা হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো প্রস্তুতিও হয়েছিল। শেষে পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় সভা হয়নি। বদলে মেদিনীপুর শহরে মিছিল করেছিলেন দলের কর্মী- সমর্থকেরা। এ বারও যদি পুলিশ অনুমতি না দেয়? তুষারবাবুর জবাব, “সভার অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হবে। যদি না দেয় বিকল্প ভাবতে হবে। এটুকু বলতে পারি, এ বার রাহুলদার সভা হবেই। মেদিনীপুরেই হবে।”
২৪ নভেম্বর সোমবারই মেদিনীপুর শহরে দুই মেদিনীপুর জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক সভা করার কথা ছিল তৃণমূলনেত্রীর। পরে সেই সভার দিনক্ষণ পাল্টায়। মেদিনীপুরের বদলে খড়্গপুরে ওই সভা হবে ১৯ ডিসেম্বর। প্রস্তাবিত সেই সভার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে রবিবার রেলশহরে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পুর-নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করেই খড়্গপুরে সভা করতে চলেছেন তৃণমূলনেত্রী। আগামী বছর পশ্চিম মেদিনীপুরের ছ’টি পুরসভায় নির্বাচন রয়েছে। লোকসভা ভোটের নিরিখে এর মধ্যে একমাত্র খড়্গপুরেই পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। সেখানে এগিয়ে বিজেপি। পুরভোটের আগে দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করতেই রেলশহরে সভা করতে চলেছে তৃণমূল।
বিজেপি অবশ্য এ নিয়ে চিন্তিত নয়। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষারবাবু বলেন, “খড়্গপুর নিয়ে তৃণমূল চিন্তিত, আমরা নই। লোকসভা ভোটের ফলে স্পষ্ট, খড়্গপুরের মানুষ আমাদের পাশে রয়েছেন। ওখানে আমরা এগোবই।” সোমবার দলের জেলা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক থেকে তৃণমূলের সমালোচনা করেন তুষারবাবু। তিনি বলেন, “জেলা জুড়ে হিংসার বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল। ডেবরা, দাঁতন, মেদিনীপুর সদরে সন্ত্রাস শুরু হয়েছে। আমরা দলের কর্মীদের বলেছি, কোনও রকম প্ররোচনায় পা দেবেন না।’’ পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগেও সরব হন তিনি। তুষারবাবু বলেন, “আমরা গাঁধী মূর্তির পাদদেশে সভা করতে চেয়েছিলাম। পুলিশ অনুমতি দেয়নি। অথচ, এ দিন দেখলাম ওখানেই সিপিএমের সংগঠন সভা করছে।” তাঁর তীর্যক মন্তব্য, “আসলে তৃণমূল সিপিএমকে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করছে। সিপিএমের বন্ধ পার্টি অফিসগুলো খুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে তৃণমূল! পুলিশ-প্রশাসনও ওদের (সিপিএম) অনুরোধ করছে, আপনারা পার্টি অফিসগুলো খুলুন! হয়তো এমন দিন খুব দূরে নেই, যে দিন জেলার মানুষ তপন ঘোষ, সুকুর আলি, দীপক সরকারদের সঙ্গে তৃণমূলকে একমঞ্চে দেখতে পাবেন! দেখবেন ওরা সকলে মিলে বিজেপির বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে!”