ভগবানপুরের কলাবেড়িয়ায় সিপিএমের কর্মিসভা।
কর্মিসভায় উপস্থিত নেই দলীয় প্রার্থীই!
এই অনুপস্থিতির কারণ জানতে চেয়ে কর্মিসভার শেষ দিকে জেলা নেতৃত্বের সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। লক্ষ্মণ কাঁটায় বিদ্ধ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএম নেতৃত্ব এই ঘটনায় ফের অস্বস্তিতে পড়লেও পরে তা সামলে নিয়ে কর্মিসভা শেষ করেন।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী ইব্রাহিম আলির সমর্থনে পূর্ব মেদিনীপুরের সবক’টি ব্লক থেকে দলের জোনাল, লোকাল ও শাখা সম্পাদক-সহ কয়েক’শো কর্মীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার কর্মিসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, পূর্বের জেলা সম্পাদক কানু সাহু, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শক্তি বেরা, হৃষিকেশ মাঝি, সনাতন বানুয়া প্রমুখ। সভার শেষ দিকে নেতৃত্বেকে ঘিরে জড়ো হয়ে দলীয় কর্মীরা একগুচ্ছ প্রশ্ন তোলেন। ক্ষোভের সঙ্গে তাঁরা জানতে চান, যাঁর সমর্থনে সভা, সেই ইব্রাহিম আলি কোথায়? তাঁকে কেন নিয়ে আসা হল না? দলের প্রার্থী ঘোষণার দু’সপ্তাহ পরেও যদি প্রার্থীকে দেখতে না পেলাম, তবে প্রচারে সাধারণ মানুষকে কী বোঝাব? খোদ দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে নেতৃত্ব তখন শীঘ্রই প্রার্থী ইব্রাহিম আলিকে এলাকায় নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
লক্ষ্মণ কাণ্ডের রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই এই ঘটনায় ফের অস্বস্তিুতে পড়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা নেতৃত্ব। কর্মিসভায় উপস্থিত দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ প্রসঙ্গে পশ্চিমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “সেটা ওদের ভুল।” ‘ওদের’ বলতে দীপকবাবু যে দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্বকে বুঝিয়েছেন তা স্পষ্ট।
কিন্তু, কেন উপস্থিত ছিলেন না তমলুকের সিপিএম প্রার্থী?
নন্দকুমার জোনাল কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শক্তি বেরা বলেন, “অন্য একটি এলাকায় ইব্রাহিম আলির রোড-শো চলছিল। তাঁর ফাঁকেই কিছু সময়ের জন্য এখানে আসার কর্মসূচি ছিল। কিন্তু প্রার্থী এখানে চলে এলে রোড-শো কর্মসূচির ব্যাঘাত ঘটবে বলে শেষ পর্যন্ত প্রার্থীকে আনা যায়নি।” তবে দলের প্রার্থী না থাকায় কর্মীদের ক্ষোভ প্রকাশের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি শক্তিবাবু। তাঁর কথায়, “এটা সামান্য ব্যপার।”
কর্মিসভায় দীপক সরকার কংগ্রেস সরকার ও বিজেপির কড়া সমালোচনা করেন। তৃণমূল সরকারের প্রসঙ্গ তুলে দীপকবাবু বলেন, “মিথ্যাচারের সরকার চলছে এ রাজ্যে। শুধু প্রতিশ্রুতি আর কথার ফুলঝুরি শোনা যাচ্ছে। উন্নয়ন হচ্ছে না। রাজ্যে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্বেও মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে।’’
অন্য দিকে, এগরা মহকুমার ভগবানপুর থানার কলাবেড়িয়া বাজার সংলগ্ন এলাকাতেও কর্মিসভা করেন দীপক সরকার। সেখানে রাজ্য সরকারকে বিঁধে বলেন, “মানুষের সমর্থন নিয়ে ৩৪ মাস সরকারে এসে গুণ্ডা ও তোলাবাজদের দলে পরিণত হয়েছে এরা।” সারদা কাণ্ড, নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গেও বর্তমান সরকারকে কটাক্ষ করেন তিনি। এ দিনের সভায় ছিলেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্মল জানা, প্রশান্ত প্রধান, প্রাক্তন সভাধিপতি নিরঞ্জন সিহি প্রমুখ।