প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে সমাজমাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ির ঘটনায় অভিযুক্ত এক এবিভিপি সদস্যকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তবে ঝাড়গ্রামের লালগড়ের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়নি।
কেশিয়াড়িতে ধৃত এবিভিপি সদস্য হলেন সৃজন ঘোষ। সমাজমাধ্যমে লাগাতার বিতর্কিত পোস্ট ও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করা পোস্ট শেয়ারের অভিযোগে শনিবার বিকেলে তাঁকে কেশিয়াড়ির বাড়ি থেকে থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করা হয় বলে পরিবার ও বিজেপির দাবি। শনিবার সন্ধ্যায় সৃজনকে মেদিনীপুরে সাইবার ক্রাইম সেলের দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার আদালতে তোলা হলে অবশ্য তিনি জামিন পেয়ে যান। সৃজনের দাবি, ‘‘বিনা দোষে আমাকে ধরা হল। কেন সমাজমাধ্যমে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এত পোস্ট করি সেই প্রশ্ন করা হয়। ফোনও ফেরত দেয়নি।’’
বছর বাইশের সৃজন এবিভিপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘে সদস্য। সংগঠনের মিডিয়া সেলের সঙ্গে যুক্ত তিনি। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই রাজ্য সরকারের নানা কাজ, রেশন, কলেজের সেমেস্টার নিয়ে সমাজমাধ্যমে নানা পোস্ট করেছেন সৃজন। ‘লাইভ’ করতেও দেখা গেছে তাঁকে। সৃজনের দাদা সৌমেন ঘোষ বলেন, ‘‘কেশিয়াড়ি থানার দু’জন পুলিশ কর্মী এসে ভাইকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তারপর থানায় বসিয়ে রাখে। আমাদের কিছুই প্রথমে জানানো হয়নি।’’ বিজেপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাশের দাবি, ‘‘গ্রেফতারের মতো কোনও গর্হিত কাজ হয়নি। কোনও কারণ না দেখিয়েই গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ এবিভিপি-র জেলা সভাপতি স্বরূপকুমার মাইতি বলেন, ‘‘ফেসবুকে পোস্ট নিয়ে মন্তব্যের জেরেই গ্রেফতার বলে জানতে পেরেছি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সাইবার সেল এ ক্ষেত্রে নজরদারি চালিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে।
অন্য দিকে, ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে আপত্তিকরর অভিযোগে লালগড়ের বাসিন্দা প্রাথমিক শিক্ষক পুরন্দর ভৌমিকেরর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা। গত শুক্রবার পুরন্দর মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে করোনা সম্পর্কিত আপত্তিকর পোস্ট করেন। নেটিজেনদের বিস্তর সমালোচনার মুখে কিছুক্ষণ সেই পোস্ট ডিলিটও করে দেন তিনি। ততক্ষণে অবশ্য পোস্টের স্ক্রিনশট সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শনিবার পুরন্দরের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখায় অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূলের লালগড় ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাতো। অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৪, ৫০৫ (শান্তিভঙ্গের উদ্দেশ্যে কু-মন্তব্য) ও ৫০৯ (মহিলার বিরুদ্ধে কু-মন্তব্য করে শালীনতা লঙ্ঘন) এবং ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যাক্টের ৬৬-এ (সামাজিক মাধ্যমে কুমন্তব্য ছড়িয়ে দেওয়া) ধারায় পুরন্দরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। সবই অবশ্য জামিনযোগ্য ধারা। পরে পুরন্দর সমাজমাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে জানিয়েছেন, মানসিক অবসাদে ভুল করে ফেলেছেন।
ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামল বলেন, ‘‘এর আগেও ওই শিক্ষক একাধিকবার ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট করেছিলেন।’’ জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘আইনমাফিক ব্যবস্থা হবে।’’