ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা। নিজস্ব চিত্র।
কালীপুজোর আগে কোলাঘাটে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় জেরে আহত হলেন কারখানার মালিক। লাইসেন্স ছাড়াই বাজি কারখানাটি চলছিল বলে অভিযোগ। যার প্রেক্ষিতে পুলিশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠল।
কোলাঘাটের পয়াগ গ্রামে পাশে ক্ষেত্রহাট মৌজায় একটি পাড়ার বাসিন্দারা বংশ পরম্পরায় কয়েক দশক ধরে বাজি তৈরি করছেন।প্রায় তিরিশটি পরিবার বাজি বাঁধার কাজে যুক্ত। যে কারণে ‘বান্ধার’ পাড়া নামে পরিচিত ওই এলাকা। এখানকার বাজির গুণগত মান উন্নত হওয়ায় ফি বছর কালীপুজোর আগে প্রচুর বরাত পান এখানকার বাজির কারবারিরা। বছর চারেক আগে এই পাড়াতেই বাজি বাঁধতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক মহিলা ও এক যুবকের। তার আগেও একাধিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও অঙ্গহানির মতো ঘটনা ঘটেছে। আশপাশের গ্রামের মানুষের অভিযোগ, প্রতিবারই দুর্ঘটনার পর পুলিশের তৎপরতা বাড়ে। আবার কখন যে সব ঝিমিয়ে যায় কেউ জানে না। এলাকায় বেআইনি বাজির কারবার নিয়ে পুলিশের কোনও হেলদোল দেখা যায় না।
অভিযোগ, এতগুলি পরিবার বাজি তৈরির কাজ করলেও কারও কাছেই তার বৈধ অনুমতি নেই। তারপরেও কোনও এক অদৃশ্য শক্তিবলে এই পাড়ায় কয়েক যুগ ধরে রমরমিয়ে চলে আসছে বাজির কারবার। বাড়ির মধ্যে একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটার কারণে কয়েকজন বাজির কারবারি বছর দুয়েক হল ফাঁকা জায়গায় মাঠের মাঝখানে তৈরি করেছেন বাজির কারখানা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ স্থানীয় নিতাই বেরা নামে এক ব্যক্তির বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে বলে দাবি স্থানীয়দের। কারখানায় প্রচুর পরিমাণে শব্দবাজি, আতস বাজি ও বারুদ মজুত ছিল বলে অভিযোগ। প্রায় দশ মিনিট ধরে শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দ। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে ঘটনাস্থল থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে দেউলিয়া বাজার এলাকাও কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের জেরে বাজি কারখানার দেওয়াল ধসে পড়ে। স্থানীয় মানুষজন কারখানার মালিক নিতাই বেরাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যায়। স্থানীয়দের মতে বাজি কারখানা মাঠের মাঝখানে থাকায় বড়সড় বিপত্তি এড়ানো গিয়েছে।স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘পয়াগে যারা বাজি বানায় তাদের কোনও লাইসেন্স নেই।স্থানীয় নেতা ও পুলিশ প্রশাসন সবই জানে। তাদের খুশি করেই দিনের পর দিন এখানে এমন অবৈধ কারবার চলছে।’’
কোলাঘাট থানার পুলিশ সূত্রের খবর, কোলাঘাটের ক্ষেত্রহাট মৌজায় মাঠের মধ্যে বাজি কারখানায় আগুন লেগে যায়। ওখানে মূলত আতস বাজি তৈরি হত। তবে কারখানার লাইসেন্স ছিল না। কারখানার মালিক নিতাই বেরার দুটি পা ঝলসে গিয়েছে। ঘটনার পর পয়াগ গ্রামে তল্লাশি চালিয়ে বাজি তৈরির বেশ কিছু সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওখানে কারও কাছেই বাজি তৈরিতে লাইসেন্স নেই। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’’