প্রতীকী ছবি।
সাত সকালের গড়বেতা স্টেশন। গুটিকয়েক যাত্রী আর প্রাতঃভ্রমণকারীর আনাগোনা। হঠাৎ তাঁরা দেখেন, প্ল্যাটফর্মে রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটে বেড়াচ্ছেন এক মহিলা। তাঁর ডান হাতের কনুইয়ের নীচের অংশ নেই।
শুক্রবার সকালে ওই দৃশ্য দেখে হইচই পড়ে যায় গড়বেতা রেলস্টেশন চত্বরে। এ দিন মাল গাড়িতে কাটা পড়ে লক্ষ্মী নামে এক মহিলার হাত। স্থানীয় সূত্রের খবর, লক্ষ্মী মানসিক অবসাদগ্রস্ত। গত কয়েকমাস ধরে গড়বেতা রেলস্টেশনে ভিক্ষে করতেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, এ দিন একটি মালগাড়ি স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল। গাড়িটি ছাড়ার সময় হয়ে যাওয়ায় স্টেশন কর্তৃপক্ষ কয়েকবার মাইকে ঘোষণা করেছিলেন লাইন পারাপার না হওয়ার জন্য। লক্ষ্মী তা না শুনে মালগাড়ির নীচ দিয়ে লাইন পারাপার করছিলেন। সেই সময় ট্রেন চলতে শুরু করে। কাটা পড়ে লক্ষ্মীর কনুইয়ের নীচের অংশ।
কিছুক্ষণ পর রেলকর্মী এবং জিআরপি-র সহায়তায় লক্ষ্মীকে গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গড়বেতার স্টেশন ম্যানেজার তপন রায় বলেন, ‘‘ওই মহিলা ঝুঁকি নিয়ে লাইন পারাপার করছিলেন। মাইকে ঘোষণা করা হয়। তাও উনি লাইন পেরোচ্ছিলেন। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে।’’ গ্রামীণ হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে লক্ষ্মী জানান, তাঁর বাড়ি বাঁকুড়ায়। স্বামী মারা গিয়েছেন। মেয়ে-জামাই থাকে বৈতলের কাছে। তাঁরা তাঁকে দেখেন না। তাই ভিক্ষা করেন। লক্ষ্মীর আর্জি, ‘‘হাতটা যেন ঠিক হয়ে যায়। না হলে ভিক্ষাটুকুও করতে পারব না।’’