প্রতীকী ছবি।
নার্সিংহোমে এক প্রসূতির মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল এগরায়। রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালালেন রোগীর পরিজনেরা। চিকিৎসক এবং নার্সিংহোমের মালিককে আটকে রেখে চলে বিক্ষোভ। শেষে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে চিকিৎসককেউদ্ধার করে।
এগরা মহকুমা হাসপাতালের পাশের এক নার্সিংহোমে গত বৃহস্পতিবার সকালে পটাশপুরে আষাড়িয়াবাঁধ এলাকায় বছর তিরিশের ভারতী সামন্ত নামে এক সন্তানসম্ভবা মহিলা ভর্তি হন। সেই সময় নার্সিংহোমের চিকিৎসকের দায়িত্বে ছিলেন সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক। নার্সিংহোমের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক মহিলাকে পর্যবেক্ষণের পর, মহিলার ডেলিভারিতে সময় দেরি আছে বলে জানান। সেই নার্সিংহোমের মালিক সঞ্জয় গোল এলাকায় হাতুড়ে হিসেবে পরিচিত। বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ মহিলার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। চিকিৎসক না থাকায় নার্সিংহোমের মালিক তথা হাতুড়ে নিজেই মহিলাকে নর্মাল ডেলিভারির উদ্যোগ করেন। মহিলা শিশুকন্যা জন্ম দেওয়ার পরেই রক্তক্ষরণ শুরু হয় বলে দাবি তাঁর পরিবারের সদস্যদের।
সূত্রের খবর, শুক্রবার ভোরে চিকিৎসক আসার আগে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মহিলার মৃত্যু হয়। চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয় রোগীর আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে। তাঁরা নার্সিংহোমের জানলা ও দরজা ভাঙচুর করেন। আটকে রাখা হয় এক চিকিৎসক-সহ নার্সিংহোমের মালিককে। ঘটনা খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আটক চিকিৎসক-সহ নার্সিংহোমের মালিককে উদ্ধার করা হয়। দেহ উদ্ধার করে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। শনিবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। যদিও ঘটনায় রোগীর পরিবার এখনও থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রোগীর এক পরিজনের কথায়, ‘‘রাতে যখন প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়, নার্সিংহোমের মালিক নিজে ডাক্তারের অপেক্ষা না করে ডেলিভারি করেন। শিশুর জন্ম হলেও রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি।’’ এগরা থানার পুলিশ জানায়, নার্সিংহোমে রোগী মৃত্যু ঘটনায় একটি উত্তেজনা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। যদিও এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযুক্ত নার্সিংহোমের মালিক সঞ্জয় গোলের কথায়, ‘‘চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যু হয়নি। আমি ডাক্তার নই, ডেলিভারিও করিনি।’’ বিষয়টি নিয়ে এগরা ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর রামচন্দ্র পণ্ডা বলেন, ‘‘নার্সিংহোমে একজন মহিলার সন্তানপ্রসব করার পরে মৃত্যু ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।’’