‘পথশ্রী’র অনুষ্ঠানে লোকশিল্পীরা। —নিজস্ব চিত্র
সরকারি অনুষ্ঠানে, নানা প্রকল্পের প্রচারে এক সময় ডাক পড়ত লোকশিল্পীদের। লকডাউনে ঘরবন্দি হয়ে সেই সব উপার্জনের পথ হয়েছিল বন্ধ। দিন কয়েক আগে রাজ্য সরকারের ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই ফের হাসি ফুটেছে লোকশিল্পীদের মুখে। পূর্ব মেদিনীপুরের ২২টি ব্লক এবং একটি পুরসভা এলাকায় ১ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। সেই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডাক পেয়েছেন জেলার লোকশিল্পীদের ১৫টি দল। এক একটি দলে পাঁচজন করে শিল্পী থাকেন। প্রত্যেকে অনুষ্ঠান পিছু এক হাজার টাকা করে পাবেন। এতেই খুশি লোকশিল্পীরা।
জেলার লোকশিল্পীরা জানাচ্ছেন, লকডাউনের দীর্ঘ ছ’মাস কোনও কাজ ছিল না তাঁদের। মাসিক সরকারি ভাতার এক হাজার টাকাই ছিল ভরসা। সেপ্টম্বর পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরে ১১ হাজার ২১০ জন লোকশিল্পী মাসিক ভাতা পেয়েছেন। কিন্তু সরকারি অনুষ্ঠানে গান, বাজনা করেও তাঁরা বাড়তি যে টাকা উপার্জন করতেন, তা ছিল সম্পূর্ণ বন্ধ।
‘পথশ্রী’ প্রকল্পে লোকশিল্পীরাও উপকৃত হবেন বলে জানাচ্ছেন জেলা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিক গিরিধারী সাহা। গিরিধারী বলেন, ‘‘২২টি ব্লক ও একটি পুরসভায় বিভিন্ন সময়ে অংশ নেওয়া শিল্পীদের জন্য ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। মূলত, লোকগানের দলের শিল্পীরাই এই বরাত পেয়েছেন।’’ জেলা তথ্য সংস্কৃতি দফতর সূত্রের খবর, শিল্পীদের এই বিষয় গান বাঁধতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলার লোকশিল্পী সুবল মাঝি গান বেঁধে তা গেয়েও ফেলেছেন একটি অনুষ্ঠানে। সুবল বলেন, ‘‘দীর্ঘ লকডাউনে ঘরবন্দি ছিলাম। লোকশিল্পী ভাতার একা হাজার টাকাই ভরসা ছিল। ছেলে-বউ সবাই মিলেই গানবাজনা করেন। এখন ফের সরকারি অনুষ্ঠানের বরাত পেয়ে ভাল লাগছে।’’
সুবল জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সং অ্যান্ড ড্রামা সংস্থা’র নথিভুক্ত তারা। সেখানে নাম রয়েছে শ্যামানন্দ রামায়ণ সম্প্রদায়। এই রাজ্যে তাঁর সম্প্রাদায়ের নাম শ্যামানন্দ লোকগান সম্প্রদায়। কিন্তু আক্ষেপ দু’বছর ধরেই কোনও ধরনের সাহায্য তারা পাননি। পাঁশকুড়ার এই শিল্পী জানাচ্ছেন, পুরসভার একটি অনুষ্ঠান তিনি করেছেন। আগামী ১৪ অক্টোবর আরও একটি অনুষ্ঠান করবেন।