শিল্পতালুকের পাঁচিল। নিজস্ব চিত্র
কথা ছিল বড় শিল্প আসবে। আসেনি। পড়েই রয়েছে গোয়ালতোড়ের প্রস্তাবিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জমি। সরকারি সেই জমি নিয়ে অনেকে ছোট শিল্প গড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর কাছে। মঙ্গলবার খড়্গপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সে বিষয়ে জানান শ্রীকান্ত। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘গোয়ালতোড়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অনেকে জমি নিতে চাইছে। কেউ কেউ কাজও দ্রুত শুরু করতে চাইছেন, কী করব?’’ বিধায়কের মুখ থেকে এ কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গোয়ালতোড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক রাজীব সিংহের ডিপার্টমেন্ট, ও ফটাফট করে দেবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে পাশে বসা রাজ্যের শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব সিংহ জেলাশাসক রশ্মি কমলকে বলেন, ‘‘এটা পাঠিয়ে দেবেন।’’
প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই কথোপকথনে পর আশাবাদী বিধায়ক শ্রীকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘দিদির নজরে যখন বিষয়টি গিয়েছে, তখন ভাল কিছুই হবে।’’ পরে বিধায়ক বলেন, ‘‘কলকাতা ও আশেপাশের এলাকার ৫ - ৬ জন শিল্প্যোদ্যোগী গোয়ালতোড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে জমি নিয়ে কাজ করতে চান বলে আমার কাছে জানান। তাঁরা কেউ অ্যাগ্রো- ইন্ডাস্ট্রি, কেউ পোলট্রি, কেউ আবার সিমেন্টের সরঞ্জামের কারখানা করতে চান। কয়েকজন জমি দেখেও যান। সেটাই আমি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।’’ জানা গিয়েছে, এরপরই জেলাশাসক রশ্মি কমল নিজে গোয়ালতোড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বিষয়টি জেনে নেন শ্রীকান্তের কাছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে আশাবাদী ছোট শিল্পোদ্যোগীরা। গড়বেতা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্পাদক তাপস চন্দ্র বলেন, ‘‘শিল্পের জন্য প্রস্তাবিত এলাকায় কয়েকবছর ধরেই সরকারি জমি পড়ে রয়েছে, এবার যদি সেই জমি ছোট ছোট ভাগ করে
ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের দেওয়া হয়, তাহলে কাজে লাগাতে পারে অনেকেই।’’ রাজ্যে ২০১১ সালে পালাবদলের পর গোয়ালতোড়ের জিরাপাড়া অঞ্চলের দুর্গাবাঁধে সরকারি বীজখামারের জমিতে শিল্প গড়ে তুলতে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়। কৃষি দফতরের বীজখামারে সরকারি জমি রয়েছে ৯৫০.১৭ একর। সেখানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। ২০১৩ সালের অগস্টে গোয়ালতোড়ে এসে এই জমি দেখে যান তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়ালতোড়ে শিল্প তালুক গড়ে তোলার কথা বলেন। তারপরই দুর্গাবাঁধে তৎপরতা শুরু করে জেলা প্রশাসন। গোয়ালতোড় থেকে প্রস্তাবিত শিল্পতালুকে প্রবেশপথের রাস্তা পিচ করে প্রশস্ত করা হয়। সরকারি জমিকে দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। সেখানে নীল-সাদা রঙের প্রলেপ পড়ে। সেখানে বিদ্যুতের একটি সাবস্টেশন গড়ার চেষ্টা হলেও তা সম্পূর্ণ হয়নি। দুর্গাবাঁধের এই সরকারি বীজখামারের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সিজার মজুমদার অবশ্য বৃহস্পতিবার ফোনে বলেন, ‘‘শিল্প নিয়ে সরকারি নির্দেশ কিছু আসেনি। জমি যদি শিল্পের কাজে লাগানো যায়, তো ভালই হবে।’’