দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে গোবিন্দ মুখোপাধ্যায় ( মাঝে)। নিজস্ব চিত্র
অনাস্থা প্রস্তাবের সমর্থনে তলবি সভা ডেকে রামজীবনপুর পুরসভা দখল নেওয়ার দাবি করল বিজেপি। তবে সেই দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল। তাদের দাবি, নিয়ম না মেনেই এই সভা ডাকা হয়েছে। তাই রামজীবনপুর পুরসভা নিয়ে চলা দীর্ঘ বিতর্কের স্থায়ী সমাধান বুধবারও হল না।
ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পাল বলেন, ‘‘তলবি সভা নিয়ম মেনে হয়নি। উপপুরপ্রধানকে অনাস্থার বিষয়টি জানানো হয়নি। তাছাড়া তিন জন কাউন্সিলর নির্দিষ্ট দিনের পরে তলবি সভা ডেকেছিলেন।” জেলাশাসক রশ্মি কমলও জানান, অনাস্থা নিয়ম মেনে হয়নি। আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বিজেপির ছয় কাউন্সিলর পুরসভা ভবনে পৌঁছন। তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা এ দিন উপস্থিত ছিলেন না। তাই বিনা বাধাতেই শুরু হয় তলবি সভা। পাশ হয়ে যায় অনাস্থা। বিজেপি তাঁদের প্রবীণ কাউন্সিলর গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়কে পুরপ্রধান মনোনীত করে। সভা শেষে পুরপ্রধানের জন্য নির্দিষ্ট ঘরে যান বিজেপির কাউন্সিলরেরা। সেখানে তৃণমূল পরিচালিত আগের বোর্ডের পুরপ্রধান নির্মল চৌধুরীর জন্য নির্দিষ্ট চেয়ারে না বসে অন্য একটি চেয়ারে বসেন গোবিন্দবাবু। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য জয়ন্ত সিংহের দাবি, “পুর আইন মেনেই তলবি সভা করা হয়েছে। তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা নিশ্চিত পরাজয় জেনেই এ দিনের সভায় আসেননি। তাই আমাদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাশ হয়ে যায়।’’ গোবিন্দবাবুর দাবি, “পুরসভা দখলে এসেছে। দল আমাকে চেয়ারম্যান করেছে। আমার লক্ষ্য রামজীবনপুর শহরের সার্বিক উন্নয়ন।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, “বিজেপি বুধবার রামজীবনপুর পুরসভায় ঢুকে যা করেছে তা পুর আইন বিরুদ্ধ ও অগণতান্ত্রিক।” তৃণমূল পরিচালিত আগের বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্মল চৌধুরীর অভিযোগ, “আমার ঘরে ঢুকে চেয়ার ফেলে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু ফাইলও খুঁজে পাচ্ছি না। থানায় এফআইআর করব।”
যদিও বিজেপির দাবি, নিয়ম মেনেই তলবি সভা ডাকা হয়েছিল। দলের ঘাটাল জেলা সাংগঠনিক সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল প্রমাণ করুক বিজেপির পুরবোর্ড বেআইনি। যা হয়েছে পুর আইন মেনেই করা হয়েছে।”