প্রতীকী চিত্র।
পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে হলেও, পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা কমিটির উদ্যোগে টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হল না। জেলা কমিটির তরফে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের পতাকা তুলতে দেখা গেল না সংগঠনের জেলা সভানেত্রী অন্বেষা জানাকে। অন্যতম শীর্ষ তৃণমূল নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর মতোই দলীয় কর্মসূচিতে তাঁরই অনুগামী বলে পরিচিত অন্বেষার এ হেন ভূমিকায় দলেরই একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন। জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও। এর আগে দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রস্তুতি নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে তাঁর ‘অনুপস্থিতি ’ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
করোনা পরিস্থিতিতে এবছর কলকাতায় টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসের মূল কর্মসূচি বাতিল করা হয়। পরিবর্তে প্রতিটি জেলায় জেলা কমিটি এবং সমস্ত কলেজকে সংগঠনের পতাকা উত্তোলন, সামাজিক কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল বক্তব্য শোনাতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিল টিএমসিপি রাজ্য নেতৃত্ব। তারপরেও শুক্রবার টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস পালন কর্মসূচিতে জেলা স্তরে কোনও কর্মসূচি নিতে দেখা যায়নি সংগঠনের জেলা সভানেত্রী অন্বেষাকে। যদিও তাঁর দাবি, মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর মহাবিদ্যালয়, মহিষাদল রাজ কলেজ এবং পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন কর্মসূচিতে তিনি অংশ নিয়েছিলেন।
মহিষাদল রাজ কলেজে এদিন টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে রক্তদান শিবির করা হয়। সেখানে সমস্ত কর্মসূচির উদ্বোধক ছিলেন পরিচালন কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী। তিনি অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘এদিনের কর্মসূচিতে অন্য কেউ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন না।’’একই ভাবে পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি মাস্ক বিতরণ এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নেওয়া হয়। সেখানকার টিএমসিপি সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা পর্যায়ের সভায় প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্রনেতা আক্রম সিদ্দিকী বলেন, ‘‘কলেজের ছাত্র সংগঠনের প্রবীণ নেতৃত্বরা পতাকা উত্তোলন করেন। বাকি কর্মসূচি কলেজের ছাত্ররা দায়িত্ব নিয়ে পালন করেছে।’’ তবে জেলা সভানেত্রী তাঁদের কলেজে এসেছিলেন দাবি করে মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর মহাবিদ্যালয়ের টিএমসিপির ইউনিট সভাপতি মহাদেব মাইতি বলেন, ‘‘সংগঠনের পতাকা এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষ তুলেছেন। মাস্ক বিতরণ চলাকালীন জেলা সভানেত্রী কলেজে এসেছিলেন।’’
এদিন জেলার ২১টি কলেজে টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের কর্মসূচিতে সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়। এ ব্যাপারে জেলা সভানেত্রীর সাফাই, ‘‘নিট এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে জেলা পর্যায়ের প্রতিবাদ কর্মসূচি আমরা পরে পালন করব ঠিক করেছি।’’ জেলা সভানেত্রীর বার বার এ ধরনের আচরণ নিয়ে টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘একাধিক কলেজের কর্মসূচিতে গিয়েছেন বলে জেলা সভানেত্রী আমাকে জানিয়েছিলেন। এ দিন ব্যস্ত থাকায় এখনও পর্যন্ত সঠিক খবর নেওয়া হয়নি। তবে জেলা সভানেত্রী মানে টিএমসিপি নয়। গোটা জেলায় প্রতিটি কলেজে যাঁরা মনপ্রাণ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে ভালবাসেন তাঁরা এদিন সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করেছেন।’’