গ্রামেগঞ্জে প্রচার বিজেপির। প্রতীকী চিত্র।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় ভাগ বসাতে হাজির ডাকঘরের নতুন প্রকল্প! এমনই দাবি গেরুয়া শিবিরের।
১ এপ্রিল থেকে চালু হয়েছে ভারতীয় ডাকঘরের নতুন প্রকল্প ‘মহিলা সম্মান সেভিংস সার্টিফিকেট’। ওই প্রকল্প নিয়ে গ্রামেগঞ্জে প্রচারও শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। যা নিয়ে শাসক-বিরোধী শিবিরে রাজনৈতিক চাপ উতোর শুরু হয়েছে। ওই প্রকল্পে সর্বনিম্ন এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ দু’লক্ষ টাকা গচ্ছিত রাখলে সাড়ে সাত শতাংশ হারে চক্রবৃদ্ধি সুদ মিলবে। রাজনৈতিক মহলের অবশ্য পর্যবেক্ষণ, পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের আগে মহিলাদের মন পেতে কেন্দ্র সরকার এমন প্রকল্প নিয়ে এসেছে। বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা নেতৃত্বের দাবি, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে মহিলারা যে ভাতার টাকা পান, সেই টাকা ডাকঘরের ওই বিশেষ প্রকল্পে গচ্ছিত রাখলে আখেরে তাঁরা উপকৃত হবেন সেটাই বোঝানো হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পঞ্চায়েত ভোট ও আগামী লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করেই কেন্দ্র সরকার ডাকঘরের এই প্রকল্পটি চালু করেছে।
সাম্প্রতিক একের পর এক দুর্নীতি-কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। পঞ্চায়েতস্তরেও নেতা-জনপ্রতিনিধিদের একাংশের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তা সত্ত্বেও আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের কারণে হেঁসেলের ভোট উপুড়হস্ত হয়েই মিলবে বলে আশাবাদী তৃণমূল। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করে। প্রতিটি পরিবারের আর্থিক সংস্থান গড়ে তোলাই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য। ওই প্রকল্পে মহিলারা মাসে পাঁচশো টাকা পান। জনজাতিভুক্ত মহিলারা পান মাসে হাজার টাকা। ডাকঘরের ওই প্রকল্পকে সামনে রেখে এই প্রকল্পের জনপ্রিয়তাতেই এবার ভাগ বসাতে চাইছে বিজেপি। সেই কারণে দলের মহিলা মোর্চার সদস্যদের দায়িত্ব নিয়ে প্রতিটি এলাকায় প্রচার করতে বলা হয়েছে।
ডাকঘরের এই প্রকল্পটি নাবালিকা থেকে সাবালিকা যে কোনও বয়সীদের জন্য। একজন মহিলা অ্যাকাউন্ট খুলে সর্বনিম্ন এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমাতে পারবেন। একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলে দু’লক্ষ টাকারও বেশি জমানো যাবে। প্রতি অ্যাকাউন্টে একবারই টাকা জমানো যাবে। ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই প্রকল্প চালু থাকবে।
টাকা গচ্ছিত রাখার দু’বছর পর সুদ সমেত ফেরত পাওয়া যাবে। তবে প্রয়োজনে টাকা জমানোর ছ’মাসের মধ্যেও তুলে নেওয়া যাবে।
বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে ডাকঘরের নতুন এই প্রকল্পের ফলে মহিলারা ভীষণই উপকৃত হবেন। মণ্ডল ও বুথস্তরে আমরা এই প্রকল্পের বিষয়ে প্রচার শুরু করেছি।’’ তিনি জানান, যে সব মহিলা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ভাতা পাচ্ছেন, তাঁরা ওই টাকা ডাকঘরে গচ্ছিত রাখলে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদে টাকার পরিমাণ বাড়বে। তাঁরা উপকৃতও হবেন।
জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে কেন্দ্র সরকার এখন পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এসব প্রকল্প চালু করেছে। তবে এসবে কোনও লাভ হবে না। মানুষ আমাদেরই সমর্থন করবেন।’’