—ফাইল চিত্র।
সামনে পুরসভা নির্বাচন। তার আগে ঘটনাচক্রে মেদিনীপুর পুরসভার দাবি, শহর নির্মল হয়ে গিয়েছে! শহরকে ‘নির্মল শহর’ হিসেবে ঘোষণার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাবও পাঠিয়েছে তারা। মহকুমাশাসক (সদর) তথা মেদিনীপুরের পুর- প্রশাসক দীননারায়ণ ঘোষের দাবি, ‘‘শহরে এখন শৌচাগারহীন কোনও বাড়ি নেই। তাই সবদিক দেখেই পুরসভার তরফে শহরকে নির্মল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত ঘোষণার জন্য রাজ্যের কাছেও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, এই ঘোষণার মধ্যে ভুল কিছু নেই। কারণ এ ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী, আগে সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে নিজেই তার এলাকাকে ‘নির্মল’ বলে ঘোষণা করতে হয়। তারপরে সেই প্রস্তাব রাজ্যের কাছে পাঠাতে হয়। মেদিনীপুরের ক্ষেত্রেও সেই মতো পদক্ষেপ হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আগেই ‘নির্মল’ জেলার তকমা পেয়েছে। মেদিনীপুর শহরের আশেপাশের গ্রামীণ এলাকাগুলিও ‘নির্মল’ হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। তবে পুরসভা সেই তকমা এতদিন পায়নি। কারণ বস্তি এলাকায় শৌচাগারের অভাব বেশি ছিল। বছর দুয়েক আগে সমীক্ষা করে দেখা যায়, শহরে প্রায় ৩৭ হাজার বাড়ির মধ্যে প্রায় ৩,৩০০টিতে শৌচাগার ছিল না। পুরসভার দাবি, তারপরে ধাপে ধাপে ওই বাড়িগুলিতে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
পুরসভার ওই সমীক্ষায় জানা গিয়েছিল, শৌচাগার না থাকা বাড়ির সদস্যরা রাস্তার পাশে বড়নালার ধারে কিংবা কংসাবতী নদীর ধারে শৌচকর্ম করতে যেতেন। কেউ কেউ পরিচিতদের শৌচাগার ব্যবহার করতেন। কয়েকটি বাড়িতে গর্ত করে চটের বস্তা দিয়ে ঘেরা অস্থায়ী শৌচাগারও (খাটা) ছিল। সমীক্ষা রিপোর্ট পাওয়ার পরে রাজ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তারপরে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ আসে। সেই টাকাতেই ওই বাড়িগুলিতে তৈরি হয়েছে শৌচাগার। মেদিনীপুর পুরসভার এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘এখন শহরে সব বাড়িতেই বিধিসম্মত শৌচাগার রয়েছে।’’
এখন তাহলে কেউই বাইরে শৌচকর্ম করেন না? পুর- প্রশাসক দীননারায়ণ বলেন, ‘‘এখন শহরে শৌচাগারহীন কোনও বাড়ি নেই। আশা করি, সবাই নিজেদের ভূমিকা ঠিকভাবে পালন করবেন।’’
রাজ্যের কাছে প্রস্তাব গিয়েছে। মেদিনীপুরের ‘নির্মল’ শহরের তকমা পাওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা!