প্রতীকী ছবি।
অসংগঠিত ক্ষেত্রের সামাজিক শ্রমিকদের সুরক্ষার বন্দোবস্ত। এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি চলছিল। তবে গতি ছিল না। এমনকি, শ্রমিক মেলা করেও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে কালঘাম ছুটত শ্রম আধিকারিকদের। অবশ্য হিসাব বদলে গিয়েছে লকডাউনের মাসে। গত দুই মাসে এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্তির সংখ্যা রেকর্ড গড়েছে! জেলার শ্রম দফতরের হিসেবে তেমনই ইঙ্গিত ।
শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তিতে গত কয়েক মাসের গড় হিসাবকে ছাপিয়ে গিয়েছে মার্চ ও এপ্রিলের হিসাব। লকডাউনের সময়েও কী কারনে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে নাম নথিভুক্তির সংখ্যা বেড়ে গেল তা পর্যালোচনা করছেন শ্রম আধিকারিকেরা। এ ক্ষেত্রে উঠে এসেছে নানা কারণ। শ্রম আধিকারিকদের একাংশের ধারনা, করোনা ও লকডাউনে বিপর্যস্ত মানুষেরা এ বার সচেতন হয়েই সুরক্ষিত জীবনের পথ বাছতে শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প ভবিষ্যতে দিশা দেখাতে পারে, এই আশাতেই অনেকে ফর্ম পূরণ করেছে। এক শ্রম আধিকারিক বলেন, “আসলে এই প্রকল্প নাম নথিভুক্ত হলে চিকিৎসার খরচ থেকে মৃত্যুতেও বিমার টাকা পাওয়া যায়। এমন কঠিন সময়ে মানুষ সেটার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেই মনে হয় এই পথে ঝুঁকেছে।” একই সঙ্গে এত দিন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে মাসিক যে ২৫ টাকা করে দিতে হত তা এখন মকুব হয়েছে। জেলার উপ-শ্রম আধিকারিক বিতান দে বলেন, “এটা ঠিক সারা বছরের হিসাব বদলে গিয়েছে গত দু’মাসে। মানুষের এই সচেতনতায় আমরাও খুশি। তবে প্রতি মাসে যে টাকা দিতে হত তা মকুব হওয়া এবং লকডাউনের মধ্যে মানুষের সুরক্ষা বলয়ে আসতে চাওয়া কারণ হলেও হতে পারে।”
এই সুরক্ষা প্রকল্পে নির্মাণ, পরিবহণ-সহ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকেরা নাম নথিভুক্ত করতে পারেন। এখন অনলাইন হয়ে যাওয়ায় মোবাইলেও অনলাইনে ফর্ম পূরণ করা যায়। প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত থাকলে সাধারণ মৃত্যুতে ৫০হাজার টাকা ও দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে ২লক্ষ টাকা পাবে উপভোক্তার পরিজন। এর বাইরেও ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ-সহ নানা সুবিধা মিলবে।
বাম শ্রমিক সংগঠন আইটাকের নেতা বিপ্লব ভট্ট বলেন, “এই সংখ্যক অসংগঠিত শ্রমিক নাম নথিভুক্ত করেছে এটা হতে পারে না। অন্য সময়ে যেখানে এত ফর্ম পূরণ হয় না, লকডাউনে সেখানে এমন ফর্ম পূরণ অবিশ্বাস্য!” যদিও উপ-শ্রম আধিকারিক বিতান বলেন, “আসলে লকডাউনে অনলাইনে বাড়ি বসে মানুষ মোবাইলেই এই ফর্ম পূরণ করতে পেরেছে। আর অন্য কাজের চাপ না থাকায় দফতরেও দ্রুত নথিভুক্ত হয়েছে।”