হনুমানদের খাওয়ানো হচ্ছে চিল্কিগড় মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র
হনুমানদের খাবার দেওয়া নিয়েও প্রকাশ্যে শাসকদলের আকচা-আকচি।
জামবনির চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দির লাগোয়া জঙ্গলে রয়েছে কয়েকশো হনুমান। লকডাউনে মন্দির চত্বরে সর্বসাধারণের প্রবেশ বন্ধ। কেবল নিয়ম রক্ষার পুজো করে চলে যাচ্ছেন পূজারী। কিন্তু বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা সপার্ষদ মন্দির চত্বরে ঢুকে হনুমানদের কলা ও বিস্কুট খাইয়েছেন। সেই ছবি সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন দেবনাথ অনুগামীরা। আর তাতে বেজায় চটেছেন চিল্কিগড় কনকদুর্গা মন্দির উন্নয়ন কমিটির কার্যকরী সভাপতি ও এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল নেতা সমীর ধল। সমীর জানান, গত ডিসেম্বর থেকে মন্দির কমিটির উদ্যোগে প্রতিদিন নিয়মিত হনুমানদের খাবার দেওয়া হচ্ছে। ৩২ জনের দানে বছরভর ওই কর্মসূচি চলছে। সমীর বলেন, ‘‘এ দিন দেবনাথ জনা চোদ্দ নেতা-কর্মীকে নিয়ে মন্দির চত্বরে ঢুকে হনুমানদের খাইয়ে সেই ছবি সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। লোকজন ভাবছেন মন্দির চত্বর খোলা রয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এটাকরা হয়েছে।’’ দেবনাথ অবশ্য বলছেন, ‘‘চিল্কিগড় মন্দির লাগোয়া ক্ষুধার্ত হনুমানদের কথা ভেবেই ৩০ ডজন কলা আর বিস্কুট নিয়ে গিয়ে খাইয়েছি। এতে রাজনীতি নেই। নিয়ম ভাঙারও প্রশ্ন ওঠে না।’’
তৃণমূলের অন্দরে দেবনাথ ও সমীরের বিরোধ সর্বজনবিদিত। ২০১৩-২০১৮ জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন সমীর। দেবনাথ গোষ্ঠীর প্রার্থী সভাপতি না হওয়ায় তখন থেকেই সমীর-দেবনাথের তিক্ততা শুরু। ২০১৮ সালের ভোটে সমীরের স্ত্রী ডলি শীট জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে হেরে যান। হারের জন্য দেবনাথ গোষ্ঠীকে দায়ী করেন সমীর। তারপর সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে এসেছেন সমীর। তাঁর কর্মকাণ্ড এখন চিল্কিগড় মন্দিরেই সীমাবদ্ধ। সেই মন্দির ঘিরেই ফের প্রকাশ্যে সমীর-দেবনাথের পুরনো বিবাদ।
জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘করোনা বিপর্যয়ে বন্যপ্রাণীরাও সঙ্কটে পড়েছে। যে যে ভাবে পারছেন মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, প্রাণীদেরও খাবার দিচ্ছেন। এ নিয়ে অযথা বিতর্ক অর্থহীন।’’