—ফাইল চিত্র।
লকডাউনের মধ্যে সবে পশ্চিম মেদিনীপুরে মদের ‘হোম ডেলিভারি’ শুরু হয়েছে। শুরুতেই চাহিদা প্রচুর। মদের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দোকানিরা। সূত্রের খবর, বিয়ার কিংবা দেশি মদের থেকে এখন চাহিদা বেশি বিলিতি মদেরই। অথচ, সাধারণত জেলায় বিলিতি মদের থেকে দেশি মদই বেশি বিক্রি হয়। এক মদ দোকানি মানছেন, ‘‘চাহিদা প্রচুর। ফোনে একের পর এক অর্ডার আসছে। অনেকের তর সইছে না! অর্ডার দেওয়ার পরে দোকানেও চলে আসছেন!’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘দিন দুয়েক দেখি। তার পরে হয়তো হাত তুলে দেওয়া ছাড়া আর গতি থাকবে না। দোকান বন্ধই রাখব!’’
চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি আবগারি দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সুপারিন্টেন্ডেন্ট একলব্য চক্রবর্তীর সঙ্গে। তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। জবাব দেননি এসএমএসেরও। তবে দফতরের অন্য এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘চাহিদা রয়েছে। হোম ডেলিভারির ক্ষেত্রে দোকানগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়াও হয়েছে।’’ কেন্দ্রের নির্দেশ রয়েছে, প্রকাশ্যে মদ বিক্রি বা পান চলবে না। রাজ্য আবগারি দফতর সূত্রের খবর, মদের ‘হোম ডেলিভারি’র ক্ষেত্রে কিন্তু সে নির্দেশ অমান্য করা হচ্ছে না। জেলার এক আবগারি আধিকারিক বলছেন, ‘‘লকডাউনে মদের দোকান বন্ধই থাকছে। যে সব দোকানের সামনে ছাড়াও পিছনে আরও একটি দরজা রয়েছে, তাদেরই হোম ডেলিভারির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, সামনের দরজা খোলা যাবে না। পিছনের দরজা খুলেই ব্যবসা চালাতে হবে।’’
আবগারি দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে মদ ব্যবসায় ৩৩৬টি লাইসেন্স রয়েছে। এর মধ্যে ১৩৯টি অন-শপের। ১৯১ টি অফ-শপের। বাকি ৬টি রেস্তরাঁ, হোটেল প্রভৃতির। মেদিনীপুর, খড়্গপুরে লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকানের সংখ্যা কম নয়। মেদিনীপুর সার্কেলে ১৯টি দোকান রয়েছে। খড়্গপুর সার্কেলে ১৭টি দোকান রয়েছে। ওই সূত্রে খবর, জেলায় গত সোমবার থেকে মদের হোম ডেলিভারি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৩৬টি দোকান থেকে হোম ডেলিভারি হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত হোম ডেলিভারির জন্য অর্ডার নেওয়া যাবে। পরে দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অর্ডার অনুযায়ী হোম ডেলিভারি করা যাবে। ওই পরিষেবা দেওয়ার জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত নির্দিষ্ট দোকানদারকে স্থানীয় থানা থেকে অনুমতি নিতে হচ্ছে।
সূত্রের খবর, জেলায় দিনে দেশি মদ (কান্ট্রি স্পিরিট) বিক্রি হয় গড়ে ৪১ হাজার লিটার। এই ক’দিনে বিক্রি হয়েছে গড়ে ৮ হাজার লিটার। দিনে বিলিতি মদ (ফরেন লিকার) বিক্রি হয় গড়ে ২০ হাজার লিটার। এই ক’দিনে বিক্রি হয়েছে গড়ে ১০ হাজার লিটার। দিনে বিয়ার বিক্রি হয় গড়ে ১৩ হাজার লিটার। এই ক’দিনে বিক্রি হয়েছে গড়ে ৬ হাজার লিটার। জেলা প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে মদ থেকে একটা বড় অংশ রাজস্ব আদায় হয়। ২০১৮-’১৯ সালে যেমন ২৭৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছিল। জেলায় মদ থেকে মাসে গড় রাজস্ব হিসেবে ২৩- ২৪ কোটি টাকা আসে।