পিছাবনীতে মদন। নিজস্ব চিত্র।
আগেও জেলায় এসে নির্বাচনের ‘রসদ’ দিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। মঙ্গলবার ফের পূর্ব মেদিনীপুরের পিছাবনীতে দলীয় সভায় মদন বললেন, ‘‘রাতের বেলা পোস্টার, ব্যানার, পতাকা দিয়ে যাব। আর যদি বলেন নির্দিষ্ট কিছু লাগবে। তবে সেটাও সাপ্লাই করে যাব।’’ বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা না হলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় রুটমার্চও শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে মদন মিত্রের বক্তব্য ভোটের সময় রাজ্যে হিংসাত্মক ঘটনাকেই অক্সিজেন জোগাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পিছাবনীতে বিজেপির পরিবর্তন যাত্রা কর্মসূচি উপলক্ষে সভা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তারই পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে তৃণমূলের সভায় মদন বলেন, ‘‘আপনারা তৈরি থাকুন। বুথের দায়িত্বে কারা থাকবে সেটা আপনারা ঠিক করুন। বুথ এজেন্টদের তালিকা তৈরি করুন। আমার কাছে ভাল খেলোয়াড়দের তালিকা দিন। তাদের ট্রেনিং দিয়ে শিখিয়ে দেব কী ভাবে খেলতে হবে।’’ পরে যোগ করেন, ‘‘যদি বলেন হকি খেলা হবে তবে হকি। যদি বলেন মেশিনে খেলা হবে তবে মেশিনে। যদি বলেন ব্যালটে হবে তবে ব্যালটে। কিন্তু এ বার ছাড়া হবে না।’’
সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের জেরাকে কটাক্ষ করে মদন বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের দুয়ারে সরকার কর্মসূচিকে ‘দুয়ারে সিবিআই’ বলেছিলেন। এ বার দুয়ারে সিবিআই নয়, এ বার নতুন স্লোগান ‘গদ্দারদের বাড়ির দুয়ারে তৃণমূল কর্মী’। বিজেপি নেতাদের বাড়ির সামনে পতাকা হাতে তৃণমূল কর্মীরা দাঁড়িয়ে থাকবে। দেখব কার কত জোর।’’
মদনের এদিনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্যে বিধানসভা ভোটেও পঞ্চায়েতের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলের। যদিও বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ উনি যে জেলে ছিলেন সে কথাটা ভুলেই গিয়েছেন। আবোল-তাবোল বকছেন। তৃণমূলের নেতারা ভোটের জন্য কী রসদ দিয়ে যেতে পারে তা আমাদের সকলেরই জানা। তবে এবার আমাদের দলের কর্মীরা অনেক শক্ত। অশান্তি করতে এলেই মোক্ষম জবাব পেয়ে যাবেন।’’
উল্লেখ্য, এ দিন মদন মিত্রর সভার আগে সোমবার খেজুরির রামচকে দলীয় পতাকা টাঙানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। বিজেপির এক কর্মী জখম হন। ওই গ্রামে একটি পাকা রাস্তার ধার থেকে বেশ কয়েকটি বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। বিজেপির তরফে খেজুরি থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।