প্রতীকী চিত্র।
নাবালিকা বিয়ে রুখতে পুরোহিত এবং কাজিদের সচেতন করতে উদ্যোগী হল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার তমলুক মহকুমার বিভিন্ন মন্দিরের পুরোহিত, মসজিদের ইমাম এবং ম্যারেজ রেজিস্ট্রারদের নিয়ে তমলুক পুরসভা হলে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিট। সেখানে নাবালিকা বিবাহ বন্ধে সরকারি আইন, অভিভাবক, পুরোহিত ও ম্যারেজ রেজিস্ট্রারদের ভূমিকার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
এ দিনের কর্মশালায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুদীপ সরকার, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুমন ঘোষ, জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক পূর্ণেন্দু পৌরাণিক, জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির সভাপতি দিলীপ দাস, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সদস্য প্রাণকৃষ্ণ দাস ও সর্বাণী কর প্রমুখ। তাঁরা পুরোহিত এবং ইমামদের কাছে আবেদন করেন যে, নাবালিকাদের বিয়ে দেওয়া বন্ধ করতে তাঁরা যেন অভিভাবকদের বোঝান। প্রয়োজনে প্রশাসনকে জানান।
জেলা সমাজ কল্যাণ দফতরের আধিকারিকদেরা জানাচ্ছেন, অভিভাবকদের একাংশ ছেলেমেয়েদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগেই তাদের বিয়ে দিয়ে দেন। কিছু ক্ষেত্রে নাবালকেরা লুকিয়ে মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করে। তাই এক্ষেত্রে পুরোহিতদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। একই ভাবে মুসলিম নাবালিকা মেয়েদের বিয়ে বন্ধ করতে স্থানীয় ইমামেরা যাতে অভিভাবকদের বোঝান, সে জন্য তাঁদের সচেতন করা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত ১৭২ জন নাবালিকার বিয়ের ঘটনা নজরে এসেছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত ৬৬টি ঘটনা নজরে এসেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক পূর্ণেন্দু পৌরাণিক বলেন, ‘‘নাবালিকা বিয়ে বন্ধে গত বছর জেলায় ৫০টি স্কুলে সচেতনতা শিবির করা হয়েছিল। তাতে সাফল্য মিলেছে। স্কুলে কন্যাশ্রী ক্লাবের ছাত্রীদের নিয়েও সচেতনতা শিবির করা হচ্ছে।’’
এ দিনের কর্মশালায় যোগ দেওয়া তমলুকের রাজগোদা হনুমানজী মন্দিরের পুরোহিত কার্তিক মিশ্র এবং চণ্ডীপুরের বরাহচণ্ডী গ্রামের জগন্নাথ মন্দিরের পুরোহিত বনবিহারী পতি বলেন, ‘‘নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধের বিরুদ্ধে আমরাও প্রচার চালাই। তবে নাবালিকাদের বিয়ের কুফল এবং আইনি বিষয়গুলি কর্মশালায় এসে জানতে পেরেছি। এতে সুবিধা হল।’’ চণ্ডীপুরের খাগদা মসজিদের ইমাম শেখ নুরু সসাফি বলেন, ‘‘নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করা খুব প্রয়োজন। প্রশাসনের তরফে এবিষয়ে কর্মশালার ফলে আমাদের সুবিধাই হবে।’’