ফাইল চিত্র।
দোরগোড়ায় ভোট। দুয়ারে পৌঁছচ্ছে সরকারও।
রাজ্যের নির্দেশ মতো অন্যান্য সব জেলার সঙ্গে আজ, মঙ্গলবার থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরেও শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। জেলার প্রতিটি ব্লক এবং শহরে এই কর্মসূচি হবে। প্রস্তুতি সারা। প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সোমবারও রাজ্যের সঙ্গে জেলাগুলির এক ভিডিয়ো বৈঠক হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। রাজ্যের তরফে বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। জেলার তরফে ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল প্রমুখ। পরে জেলা থেকে শহর এবং ব্লকগুলিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, সুষ্ঠুভাবে কর্মসূচি রূপায়ণে মহকুমা এবং ব্লকস্তরে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। ব্লকপিছু একজন করে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্বে রাখা হয়েছে। তাঁরা কর্মসূচির উপরে নজর রাখবেন। শহরপিছুও একজন করে আধিকারিক দায়িত্বে থাকছেন। সার্বিক নজরদারিতে থাকছেন অতিরিক্ত জেলাশাসকেরা। পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১টি ব্লক। সবং-সহ ৫টি ব্লকের দায়িত্বে থাকছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আনসুল গুপ্ত। কেশিয়াড়ি-সহ ৫টি ব্লকের দায়িত্বে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) তুষার সিংলা। ঘাটাল-সহ ৫টি ব্লকের দায়িত্বে অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেশপুর সহ ২টি ব্লকের দায়িত্বে অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) প্রতিমা দাস। শালবনি-সহ ৪টি ব্লকের দায়িত্বে থাকছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুদীপ সরকার। অতিরিক্ত জেলাশাসকেরা জেলাশাসক রশ্মি কমলের কাছে রিপোর্ট করবেন।
বছর ঘুরলে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি সুবিধে পৌঁছে দিতে নতুন এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনের আগে মানুষের আরও কাছে পৌঁছতে চায় সরকার। ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। সরকারি প্রকল্পের সুবিধে পৌঁছে দিতে পঞ্চায়েত এবং পুর- এলাকায় শিবির হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, চারটি পর্যায়ে শিবির হবে। প্রথম পর্যায়ের শিবির ১-১১ ডিসেম্বরের মধ্যে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৫-২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে। তৃতীয় পর্যায়ের ২-১২ জানুয়ারির মধ্যে। চতুর্থ পর্যায়ের ১৮-৩০ জানুয়ারির মধ্যে।
প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, সরকারি প্রকল্পগুলিতে নাম নথিভুক্তি বা শংসাপত্র পাওয়ার জন্য আর দূরে যেতে হবে না। প্রয়োজনীয় নথি-সহ নির্দিষ্ট দিনগুলিতে স্থানীয় শিবিরে উপস্থিত হলেই হবে। সেখানে সরাসরি আবেদন করে প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবে। পঞ্চায়েত এবং পুর- এলাকার কোনও স্কুল, কলেজ, কমিউনিটি হল কিংবা অন্য কোনও সরকারি ভবন চত্বরে এই শিবির হবে। শিবিরে স্বাস্থ্যসাথী, কৃষকবন্ধু, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী-সহ ১১টি প্রকল্পের ফর্মপূরণ করে জমা দেওয়া যাবে। যাঁরা বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য, অথচ এখনও পাননি তাঁরা যেমন আবেদন জানাতে পারবেন ওই সব শিবিরে, তেমনই নতুন দাবিদাওয়া থাকলেও তাও জানানো যাবে। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় ৯৭ শতাংশ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কোনও না কোনও প্রকল্পের সুবিধা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের ঘরে পরিষেবা পৌঁছে দিতে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর। শিবিরে আসা আবেদনগুলির ক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গে কাজ হবে।’’