সঙ্গে প্রচুর বিজেপির কর্মী-সমর্থক থাকায় প্রার্থীদের আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।
মাস দুয়েক আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল বিজেপির প্রার্থিতালিকা। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলাও হয়েছিল দলের অন্দরে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামের সেই হরিপুর অঞ্চলের বিজেপি প্রার্থীরা প্রথম দিনেই মনোনয়ন জমা করলেন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বিডিও অফিসে গিয়ে। প্রচুর লোকজন নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বচসাও বাধে পুলিশের। তা ঘিরে সাময়িক ভাবে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আগামী ৮ জুলাই রাজ্য পঞ্চায়েত ভোট। শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া। তা চলবে ১৫ জুন পর্যন্ত। প্রথম দিনেই হরিপুর অঞ্চলের ১৪ জন প্রার্থী বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পালের নেতৃত্বে জানকীনাথ মন্দিরে পুজো দিয়ে বিডিও অফিসে যান। সঙ্গে প্রচুর বিজেপির কর্মী-সমর্থক থাকায় প্রার্থীদের আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য পুলিশের নির্দেশ মতো কেবল প্রার্থীরাই বিডিও অফিসে গিয়ে মনোনয়ন জমা দেন।
ঘটনাচক্রে, ওই ১৪ জনের নাম সম্বলিত প্রার্থিতালিকা গত ২৫ মার্চই প্রকাশ করে দিয়েছিল বিজেপি। যা নিয়ে জেলায় দলের অন্দরে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। শুক্রবার বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই আজ হরিপুরের ১৪ জন প্রার্থী প্রথম মনোনয়ন জমা করেছেন।’’ তবে বাকি মনোনয়ন সোমবার থেকে জমা করা হবে। জেলা বা রাজ্য কমিটিও আলাদা করে কোনও প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করবে না বলে জানান তপন। তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত মণ্ডলকে প্রার্থিতালিকা জেলা কমিটিতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী মনোনয়ন জমা করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’
নন্দীগ্রামে বিজেপির এই তৎপরতাকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক তৃণমূল। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, “আমাদের দল অত্যন্ত শৃঙ্খলাপরায়ণ। তাই প্রার্থিতালিকা কোনও ভাবেই স্থানীয় স্তরে ঘোষণা করা হবে না। এই বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বই শেষ কথা বলবেন। রাজ্য থেকে দেওয়া প্রার্থিতালিকা অনুযায়ী মনোনয়ন জমা করা হবে।” বাপ্পাদিত্যের সংযোজন, “হরিপুর অঞ্চলে বিজেপির বিতর্কিত নেতারা আজ মনোনয়ন জমা করেছেন। দলের জেলা ও রাজ্য কমিটিকে এড়িয়ে এই একটি কেন্দ্রে মার্চ মাসে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করা হয়েছিল। যারা এখনও দেওয়াল লিখতেই পারেনি। তাই ওরা আগে মনোনয়ন দিলেও তাতে তৃণমূলের কোনও মাথাব্যথা নেই।”
সিপিএম জানিয়েছে, শুক্রবার তারাও মনোনয়ন জমা দেবে না। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, “এখনও আমরা প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করিনি। রাতারাতি ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেই বুথ স্তর থেকে প্রার্থিতালিকা জেলায় চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আজ কোনও মনোনয়ন হচ্ছে না। আগামী সোমবার থেকে মনোনয়নের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।”