মেনুকার্ডে বার্তা। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের সরস্বতী পুজোর প্রীতিভোজের মেনুকার্ড। সেই কার্ডেই জল সংরক্ষণের বার্তা। মেদিনীপুর গ্রামীণের পলাশি প্রাথমিক স্কুলের এমন মেনুকার্ডের প্রশংসা করেছেন স্থানীয় বিধায়ক দীনেন রায়। দীনেনবাবুর কথায়, ‘‘এ ভাবেই সচেতনতা গড়ে ওঠে। ওই স্কুলকে ধন্যবাদ।’’
বুধবার স্কুলের সরস্বতী পুজোর প্রীতিভোজ ছিল। খেতে বসে মেনুকার্ড হাতে পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা দেখে সেখানে লেখা রয়েছে, ‘জল করলে নষ্ট, পরে হবে কষ্ট।’ কার্ডে এ-ও লেখা রয়েছে, ‘জল অপচয় বন্ধ করুন, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করুন।’ স্কুলের ছাত্রী সুদেষ্ণা ভুঁইয়ার কথায়, ‘‘মেনুকার্ডের লেখাগুলো খুব ভাল। কার্ডটা গুছিয়ে রেখেছি।’’ পলাশি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌম্যসুন্দর মহাপাত্র বলছিলেন, ‘‘জলের গুরুত্ব ও সংরক্ষণের ভাবনা নিয়ে স্কুলের ছেলেমেয়েদের আরও সচেতন করতে চেয়েছি। সেখান থেকেই এমন ভাবনা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলের অনেক ছেলেমেয়েই মেনুকার্ড বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গুছিয়ে রাখে। কার্ডের লেখা নিশ্চিতভাবে প্রভাব ফেলবে।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলায় জলের সমস্যা নতুন নয়। প্রশাসনের একাংশ মানছে, বেশ কিছু এলাকায় জলকষ্ট থাকে। গরমে জলস্তর একেবারে নীচে নেমে গেলে চাষেও জলের অভাব প্রকট হয়ে ওঠে বেশ কিছু এলাকায়। এর উপর এলাকায় এলাকায় অসংখ্য সাবমার্সিবল পাম্পের ব্যবহারে ভূগর্ভস্থ জলস্তর হু হু করে নীচে নামছে। সব নিয়ে সমস্যায় জেরবার জেলার একাংশ বাসিন্দা।
এই পরিস্থিতিতে জল সংরক্ষণ ও জলের অপচয় রোধে জনসচেতনতা জরুরি। তবে জেলায় এই সচেতনতা গড়ে তোলার কাজটা সেই ভাবে হয় না বলে অভিযোগ। জল সংরক্ষণের তেমন উদ্যোগ নেই। জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা যেমন অপ্রতুল তেমন অপচয়ও হচ্ছে নানা ভাবে। অনেকে মনে করছেন, এতে রাশ টানা না- গেলে আগামী কয়েক বছর পরে জলের সমস্যা পশ্চিম মেদিনীপুরে আরও প্রকট হয়ে উঠবে। সেই কারণে এখন থেকেই অপচয় বন্ধ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে জল সংরক্ষণের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। এখানেই এগিয়ে এসেছে প্রাথমিক স্কুল।