শিক্ষার অধিকার আইন বলছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমতি নিতেই হবে। প্রাথমিক স্তরে প্রাথমিক শিক্ষা পষর্দ আর মাধ্যমিক স্তর হলে মাধ্যমিক শিক্ষা পষর্দ। রাজ্য হোক বা কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমতি বাধ্যতামূলক।
বেসরকারি স্কুলগুলিতে প্রাথমিক স্তরে প্রি-নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। কিছু কিছু জেলা সদর বা মফস্বল এলাকাগুলিতে মাধ্যমিক স্তরেও পড়ানো হচ্ছে। এগুলির মধ্যে কিছু ইংরেজিমাধ্যমও রয়েছে। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে চলা অধিকাংশ স্কুলই চলছে অনুমতি ছাড়াই। অনেক দূরে শিক্ষার অধিকার আইন। অভিযোগ, শিক্ষা দফতরও জানে না জেলায় কত এই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। শিক্ষা দফতরের এক পদস্থ আধিকারিকের আক্ষেপ, “মোটা টাকা নেওয়া হচ্ছে। টিউশন ফিও বেশ চড়া। শিক্ষার অধিকার আইন এবং নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে এমন ব্যবসা।’’ ওই আধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘নিয়ম মানাতে বেসরকারি স্কুল গুলিতে সরকারি নজরদারির বালাই নেই। অনেক কর্তৃপক্ষ নিয়মই জানেন না।”
মানবসম্পদ তৈরির ভার যাঁরা নেবেন তাঁদের তাঁরা শিক্ষার অধিকার আইন-২০০৯ মানতে হবে। রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া। আবেদনকারীর কাছে থাকতে হবে সবর্শিক্ষা মিশন থেকে দেওয়া ডাইস কোড (ডিস্ট্রিক ইনফরমেশন অফ স্কুল এডুকেশন)। স্কুলগুলির সমস্ত তথ্য হাতের মুঠোয় রাখতে এ রাজ্যে ২০০৭ সালে তৈরি হয় কোড। এগারো সংখ্যার এই নম্বরটিতে ক্লিক করলেই সরকারি বা বেসরকারি স্কুলের সমস্ত নথি ভাসবে চোখের সামনে। এই কোড নম্বর উল্লেখ করে নির্দিষ্ট ফর্মে অনুমতি চাইতে হবে। শিক্ষা দফতর থেকেই এই অনুমতি দেওয়া হয়। গ্রামীণ স্কুলে তিন হাজার টাকা এবং শহরাঞ্চলে ছ’হাজার টাকা দিয়েই আবেদন করতে হয়। আবেদনের পর শিক্ষা দফতরের নির্দিষ্ট এক কমিটি পরিদর্শনে আসে। তারপর নিয়ম ঠিকঠাক থাকলেই মিলবে পড়ানোর অনুমতি। তবে অনুমতি মিললেই হল না। পালন করতে হয় নানা শর্ত। যেমন, যে সংস্থা প়়ড়ানোর অনুমতি পাবে তাদের ২৫ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীকে নিখরচায় পড়াতে হবে। স্কুলের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। করাতে হবে অডিটও।
আইন বলছে, স্কুলগুলি রাজ্য সরকারের নজরদারিতেই চলবে। জেলা স্কুলপরিদর্শক অমর কুমার শীলের প্রতিক্রিয়া, “নিয়ম মেনে চলতেই হবে। নিয়ম না মানলে সংশ্লিষ্ট স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হবে।” শিক্ষা দফতরের একাংশ মেনে নিচ্ছে, নিয়ম না মেনে চলার জন্য স্কুল বন্ধ হয়েছে এমন নজির সাম্প্রতিক অতীতে নেই।