Kankrajhore

স্কুলে তালা ঝোলালেন গ্রামবাসী, বন্ধ পড়াশোনা

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রায়দিনই দেরি করে স্কুল খোলা হয়। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা না হলে স্কুল বন্ধই থাকবে, জানিয়েছেন গ্রামবাসী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলপাহাড়ি শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:০৩
Share:

বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন অভিভাবQক ও গ্রামবাসী। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে সোমবার ছুটি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। অথচ বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোর প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছিল মঙ্গলবারও। তারপর বুধবারও নির্ধারিত সময়ে স্কুল খোলা হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন খামখেয়ালিপনার জেরে বুধবার স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিলেন অভিভাবক ও গ্রামবাসীর একাংশ। এমন ঘটনায় এ দিন স্কুলে হয়নি পঠন-পাঠন। রান্না করা যায়নি মিড ডে মিলও।

Advertisement

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রায়দিনই দেরি করে স্কুল খোলা হয়। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা না হলে স্কুল বন্ধই থাকবে, জানিয়েছেন গ্রামবাসী। বেলপাহাড়ি পশ্চিম চক্রের অন্তর্গত কাঁকড়াঝোর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সংখ্যা ২০ জন। স্থায়ী একমাত্র শিক্ষক সূর্যকান্ত মণ্ডল রয়েছেন স্কুলের টিচার-ইনচার্জের দায়িত্বে। তাঁর বাড়ি কাঁকড়াঝোর থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানা এলাকায়। কাঁকড়াঝোরে স্কুলের কাছেই অস্থায়ী ভাবে থাকেন তিনি। সুযোগ মতো বাইকে চড়ে বাড়িও যান। আর রয়েছেন পার্শ্বশিক্ষক ধর্মাল মাণ্ডি। ধর্মাল অবশ্য কাঁকড়াঝোরের স্থায়ী বাসিন্দা।

অভিভাবকদের অভিযোগ, দুই শিক্ষকের মধ্যে বনিবনা নেই। যার ফলে ঠিকমতো স্কুল চলছে না। ফলে ভোগান্তি হচ্ছে পড়ুয়াদের। অভিযোগ, সোম ও মঙ্গলবার দু’দিনই স্কুল বন্ধ ছিল। অভিযোগ, বুধবার তিনজন পড়ুয়াকে চাবি দিয়ে স্কুল খুলতে বলেন পার্শ্বশিক্ষক। এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও গ্রামবাসীর একাংশ স্কুলে তালা লাগিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পরে অবশ্য টিচার-ইনচার্জ সূর্যকান্ত মণ্ডল এসে পৌঁছন। আসেন পার্শ্বশিক্ষক ধর্মাল মাণ্ডিও। কিন্তু অভিভাবকরা জানিয়ে দেন, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে বিহিত না করা পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকবে। অভিভাবক চন্দ্রমোহন মাহাতো, ইন্দ্রজিৎ সিং বলছেন, ‘‘মাসে ১৫ দিন স্কুল হয়। বাকি দিনগুলি অনিয়মিত ক্লাস হয়। টিচার-ইনচার্জ বাড়ি গেলে পার্শ্বশিক্ষক স্কুল খোলেন না। আমলাশোল, আমঝর্নার মতো এলাকার অন্য গ্রামের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে নিয়মিত পঠন-পাঠন হচ্ছে। অথচ কাঁকড়াঝোরের স্কুলে পঠন-পাঠন হচ্ছে না।’’ ইন্দ্রজিতের কথায়, ‘‘যা পরিস্থিতি তাতে মনে হচ্ছে কর্তৃপক্ষ চাইছেন আমাদের ছেলেমেয়েরা মূর্খ হয়ে থাকুক, গরু চরাক।’’ টিচার-ইনচার্জ সূর্যকান্ত মণ্ডল বলছেন, ‘‘আমি একমাত্র স্থায়ী শিক্ষক। টিচার-ইনচার্জের দায়িত্বে থাকায় মাঝে মধ্যে স্কুলের প্রশাসনিক কাজে বিভাগীয় দফতরে যেতে হয়। ১৫ দিন অন্তর বাড়ি যাই। মঙ্গলবার পার্শ্বশিক্ষককে স্কুল খুলতে বলেছিলাম। এ দিন মিড ডে মিল সামগ্রীর বকেয়া দাম মিটিয়ে স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়।’’

Advertisement

এই প্রসঙ্গে শিক্ষক ধর্মাল মাণ্ডি বলেন, ‘‘টিচার-ইনচার্জ বাড়ি চলে গেলে আমাকে স্কুল সামলাতে হয়। টিচার-ইনচার্জ যখন রয়েছেন, ফলে আমার তো স্কুল চালানোর কোনও এক্তিয়ার নেই।’’ সূত্রের খবর, গত বছর ডিসেম্বরেও স্কুল নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। শো-কজ় করা হয়েছিল টিচার-ইনচার্জকে। বেলপাহাড়ি পশ্চিম চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ওসমান আলি মণ্ডল বলেন, ‘‘টিচার ইনচার্জ ও পার্শ্বশিক্ষকের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা মিটিয়ে বৃহস্পতিবার স্কুল খোলার জন্য পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement