আটা মিলের দরজা ভেঙে ঢুকছে রামলাল। লোধাশুলি রেঞ্জের গাড়রো এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
চাঁদড়া ছাড়ল হাতির দল। স্বস্তিতে জেলার বনকর্তারা। স্বস্তিতে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারাও। আজ, শুক্রবার থেকে মেদিনীপুর গ্রামীণের চাঁদড়ায় শুরু হওয়ার কথা ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির। শিবিরে আসার কথা কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দলের। শিবির শুরু হওয়ার আগে হাতির দলটি এলাকা ছাড়ায় স্বস্তি একাধিক মহলে।
জেলার এক বনকর্তার কথায়, ‘‘চেয়েছিলাম হাতির দলটি দ্রুত ওই এলাকা ছাড়ুক। যে এলাকায় স্বাস্থ্য- শিবির হবে, সেই এলাকার আশেপাশে হাতির দল থাকলে একটা উদ্বেগ থাকতই।’’ জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তাও বলেন, ‘‘হাতির একটি দল ওই এলাকায় থাকায় আমরা খানিক উদ্বেগেই ছিলাম। দলটি এলাকা ছেড়েছে শুনে স্বস্তি পেয়েছি। শিবিরটা সুষ্ঠু ভাবে করা যাবে।’’ ২৪ এবং ২৫ মার্চ, এই দু’দিন ধরে চাঁদড়ায় ওই শিবির হওয়ার কথা। চাঁদড়া হাইস্কুল চত্বরে শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে। সেই মতো প্রস্তুতি সারা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘এ বার চাঁদড়ায় দুয়ারে ডাক্তার শিবির হবে। আশা করি, সুষ্ঠু ভাবেই এই শিবির হবে। জেলা থেকে যে সব পদক্ষেপ করার করা হয়েছে।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের কাছে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছতেই এই শিবির। শিবিরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা থাকবেন। তাঁরা রোগী দেখবেন। চাঁদড়ার প্রস্তাবিত শিবিরে দেড় হাজার রোগী আসবেন বলে মনে করছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
চাঁদড়ার শিবিরের প্রস্তুতি- পর্বে হাতি নিয়ে চিন্তা দেখা দিয়েছিল। কারণ, মেদিনীপুর গ্রামীণের এই এলাকায় ছিল হাতির একটি দল। দলে ১২- ১৩টি হাতি ছিল। দলটি মাঝে মধ্যে লোকালয়েও চলে আসছিল। দল তো দূরের কথা, শিবিরে ১- ২টি হাতি চলে এলেও বিপত্তি বাধত। শোরগোল পড়ত। রোগীর জখম হওয়ার আশঙ্কাও থাকত। শুক্রবার চাঁদড়ায় ডাক্তারেরা আসবেন। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই এই এলাকা ছেড়েছে হাতির দলটি। বন দফতর সূত্রে খবর, বুধবার পর্যন্ত মেদিনীপুর বন বিভাগের অধীন এলাকায় ২১টি হাতি ছিল। এর মধ্যে ১২- ১৩টি হাতির দলটি ছিল চাঁদড়ার শুখনাখালিতে। বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদড়ার পাটকশোল, চাতরকলা ইত্যাদি এলাকায় ঘুরতে দেখা গিয়েছিল দলটিকে। বৃহস্পতিবার ভোরে হাতির দলটি কংসাবতী নদী পেরিয়ে খড়্গপুর গ্রামীণের জটিয়ার জঙ্গলে চলে গিয়েছে। চাঁদড়ায় ফিরেছে স্বস্তি। মেদিনীপুর বন বিভাগের অধীন এলাকায় এখন ৭টি হাতি রয়েছে। সবগুলিই রেসিডেন্সিয়াল। চাঁদড়া রেঞ্জের গাড়রা, সুন্দরলটা, শুখনাখালিতে একটি করে রেসিডেন্সিয়াল হাতি রয়েছে।
এক বনকর্তা বলছেন, ‘‘রেসিডেন্সিয়াল হাতি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। চিন্তা ছিল ওই দল হাতিকে নিয়েই।’’ এ দিন চাঁদড়া হাইস্কুল চত্বর পরিদর্শন করেছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। কোথায়, কী পরিকাঠামোর বন্দোবস্ত রয়েছে, সে সব দেখেছেন।