কংগ্রেসের সভায় হামলা, খড়্গপুরে অভিযুক্ত তৃণমূল

কংগ্রেসের সভামঞ্চে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, প্রচারের নামে ওই সভা থেকে তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানো হচ্ছিল। রবিবার রাতে খড়্গপুরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের খরিদায় ওই ঘটনার পরে কংগ্রেস ও তৃণমূল দু’পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী তথা শহর তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা তাদের প্রচারসভায় হামলা চালিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০২
Share:

থানার পথে কংগ্রেস নেতারা।

কংগ্রেসের সভামঞ্চে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, প্রচারের নামে ওই সভা থেকে তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানো হচ্ছিল। রবিবার রাতে খড়্গপুরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের খরিদায় ওই ঘটনার পরে কংগ্রেস ও তৃণমূল দু’পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী তথা শহর তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা তাদের প্রচারসভায় হামলা চালিয়েছে। যদিও তৃণমূলের দাবি, ওই সভামঞ্চ থেকে দেবাশিসের নামে কুৎসা করছিলেন ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী সত্যদেও শর্মা। সে জন্যই মানুষ প্রতিরোধ করেছে।

Advertisement

সত্যদেওয়ের সঙ্গে দেবাশিসের ঠান্ডা লড়াই দীর্ঘ। পুর-নির্বাচনের আগে প্রতিবারই সেই লড়াই প্রকট হয়ে ওঠে। যে ওয়ার্ডে দেবাশিস প্রার্থী হবেন সেখানেই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলেও বরাবর ঘোষণা করেন সত্যদেও। ২০১০ সালের পুরভোটে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দেবাশিস লড়েছিলেন দু’জনে। সে বার সিপিএম সমর্থিত নির্দল ছিলেন সত্যদেও। তাঁর কাছে হেরেছিলেন দেবাশিস। তাই দু’জনের কাছেই এ বারের লড়াই সম্মান রক্ষার। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যায় যে জায়গায় কংগ্রেসের সভা চলছিল, সেখান থেকে শহর তৃণমূলের কার্যালয় ৩০০ মিটার দূরে। মাইক থাকায় বক্তব্য শুনছিলেন তৃণমূল কর্মীরাও। ওই সভায় ছিলেন বিদায়ী পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে, জেলা নেতা শম্ভু চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। শেষ বক্তা প্রার্থী সত্যদেও যখন মঞ্চে যখন উঠছেন, তখন জেলা নেতাদের কেউই অবশ্য ছিলেন না। গোড়া থেকেই দেবাশিসকে কেন্দ্র করে নানা কথা বলতে থাকেন সত্যদেও। তেলুগু সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিয়ে দেবাশিসের পুরনো কিছু মন্তব্য নিয়েও নানা কথা বলেন তিনি। তৃণমূলের অভিযোগ, সত্যেদেও বক্তৃতায় জাতিগত বিভেদ টানার চেষ্টা করছিলেন। তাতেই তেতে ওঠে এলাকা। তৃণমূলের কার্যালয়ের দিক থেকে ছুটে আসেন কিছু যুবক। সত্যদেওয়ের সঙ্গে হাতাহাতি বাধে তাঁদের। আসেন দেবাশিসও। গোলমালের খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। শেষে আইসি দীপক সরকার পরিস্থিতি সামাল দেন। ঘটনাস্থলে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত, এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল-সহ বিশাল পুলিশবাহিনী। রাতে বসানো হয় পুলিশ পিকেট।

সোমবার সকালেও উত্তপ্ত ছিল ওই এলাকা। আসেন বিদায়ী কংগ্রেস পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে। সত্যদেও এবং কয়েকজন বিদায়ী কাউন্সিলরকে নিয়ে থানায় যান তিনি। দেবাশিস চৌধুরী, গোবিন্দ মণ্ডল-সহ তৃণমূলের ১১ জনের নামে হামলার লিখিত অভিযোগ করা হয়। রবিশঙ্করবাবু বলেন, “আমি সভামঞ্চ ছাড়ার পরেই কিছু দুষ্কৃতী নিয়ে দেবাশিস চৌধুরী সভা ভেস্তে দিতে হামলা চালিয়েছে। শহরের বিভিন্ন লজে ও ধর্মশালায় তৃণমূলের বহিরাগত দুষ্কৃতীরা ঘাঁটি বানাচ্ছে। আমরা পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।’’ সত্যদেওয়েরও বক্তব্য, “দেবাশিস চৌধুরী হারবে বুঝেই এই হামলা করেছেন। ওঁরা ফের সন্ত্রাস চালাবে। তাই কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছি।”

Advertisement

এ দিন পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করেন দেবাশিস। সেখানে ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ, জেলা সাধারণ সম্পাদক অজিত মাইতি প্রমুখ। দেবাশিস অভিযোগ করেন, “জাতপাতের ভেদাভেদ তুলে ধরে ব্যক্তিগতস্তরে নেমে কংগ্রেসের নেতৃত্বের উপস্থিতিতে আক্রমণ করা হচ্ছিল। এ সব নির্বাচনী বিধি বিরুদ্ধ। আমরা প্রশাসনে অভিযোগ করছি।’’ আপনারা হামলা করলেন কেন? জবাবে অজিত মাইতির দাবি, “আমাদের কেউ হামলা করেনি। এলাকার লোকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement