Councilor

পুরসভার দোকান দখল, কাঠগড়ায় দুই কাউন্সিলর

বন্ধ থাকা ওই দু’টি দোকানঘর পুরসভার দুই কাউন্সিলর নিজের পরিবারের সদস্যদের নামে নিয়ে রাখলেও সেখানে দোকান চালু করা হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০১:৩৫
Share:

এই দু’টি দোকান নিয়েই বিতর্ক।

বেকারদের ব্যবসার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তমলুক শহরের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের কাছে দোকানঘর বানিয়েছিল পুরসভা। প্রায় ৮ বছর আগে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি দ্বিতল ভবনের নীচের তলায় চারটি দোকানঘর করা হয়। চারটি দোকানঘরের মধ্যে দু’টি পুর কর্তৃপক্ষ চুক্তির ভিত্তিতে ভাড়া দিলেও বাকি দুটি দোকান তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

বন্ধ থাকা ওই দু’টি দোকানঘর পুরসভার দুই কাউন্সিলর নিজের পরিবারের সদস্যদের নামে নিয়ে রাখলেও সেখানে দোকান চালু করা হয়নি। এমনকী তার ভাড়াও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পুরসভা সূত্রে খবর, ৮ বছর ধরে দোকানঘর দখলে রাখলেও সেখানে দোকান চালু না করায় পুর কর্তৃপক্ষের তরফে সম্প্রতি ওই দুটি দোকানঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত তমলুক পুরসভায় পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেনের সঙ্গে দুই কাউন্সিলরের ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়েছে। পুরসভার তৈরি দোকানঘর দখলে রেখেও সেখানে দোকান চালু না করা ও দীর্ঘদিন ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘হ্যামিল্টন হাইস্কুলের কাছে পুরসভার দু’টি দোকানঘর দীর্ঘদিন দখলে রাখা সত্ত্বেও দোকানঘর নেওয়ার জন্য কোনও ‘সিকিউরিটি মানি’ ও দোকানের ভাড়া পায়নি পুরসভা। পুরসভার উন্নয়নের কাজের জন্য ওই দোকানঘর কাজে লাগানোর পরিকল্পনা হয়েছে। তাই ওই দোকানঘর দখলে রাখা দু’জনকে নোটিস দেওয়া হয়েছে দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তবে তাঁরা কাউন্সিলরের আত্মীয় কিনা বলতে পারব না।’’ পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে খবর, হ্যামিল্টন হাইস্কুলের কাছে তমলুক পুরসভার পুরনো জলপ্রকল্পের অফিস সংলগ্ন জমিতে ২০০৮ সালে দ্বিতল ভবন তৈরি করে তৎকালীন পুরসভা। ওই ভবনের নীচের তলায় ব্যবসার উপযোগী চারটি দোকানঘর তৈরি করা হয় এবং দোতলায় দু’টি অফিসঘর তৈরি করা হয়। পুরসভার তৈরি ওই চারটি দোকান ব্যবসার জন্য বেকারদের ভাড়া দিতে উদ্যোগী হয় পুরসভা। দোকানঘর ভাড়া নেওয়ার জন্য সিকিউরিটি মানি বাবদ এক লক্ষ টাকা ও প্রতি মাসে আড়াইশো টাকা ভাড়া নির্ধারণ করেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার নিয়ম মেনে ওই চারটি দোকান বণ্টনের জন্য আবেদন জমা নেওয়া হয়। দু’টি দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্য শহরের দুই বাসিন্দা ও বাকি দু’টি দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্য দুই কাউন্সিলরের আত্মীয় নির্বাচিত হন। কিন্তু অভিযোগ, দু’টি দোকান ভাড়ায় নেওয়ার পর ২০১২ সালে দুই বাসিন্দা এক লক্ষ টাকা ও মাসিক ভাড়া দিয়ে দোকান চালু করলেও বাকি দু’জন দোকানের চাবি নিলেও দোকানের সিকিউরিটি মানি ও মাসিক ভাড়া দেননি বলে অভিযোগ।

আট বছর ধরে দু’টি দোকান দখলে রেখেও চালু না করায় এবং ভাড়া না দেওয়ায় সম্প্রতি পুর কর্তৃপক্ষ ওই দু’টি দোকান পুনরুদ্ধারের জন্য নোটিস দিলে তা নিয়ে শোরগোল পড়ে শাসক দলের অন্দরে। আত্মীয়ের নামে একটি দোকান নিয়ে রাখার কথা স্বীকার করলেও তৃণমূল কাউন্সিলর পৃথ্বীশ নন্দীর দাবি, ‘‘ওই দোকানঘরের ভাড়া কত হবে তা জানতে চেয়ে পুরসভাকে চিঠি দিলেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি। তাই দোকানের ভাড়া দেওয়া যায়নি। দোকানও চালু করা যায়নি। পুরসভার তরফে আচমকা দোকানঘর ছাড়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে। আমাকে হেনস্থা করতেই এটা করা হচ্ছে।’’ পুরপ্রধান বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনে নোটিস দিয়েছি। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement