—প্রতীকী চিত্র।
ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা আইন বাতিল হয়ে সোমবার থেকে বলবৎ হয়েছে নতুন তিনটি আইন। নতুন আইনে অভিযোগ দায়ের থেকে মামলা রুজুও শুরু হয়েছে। নয়া আইনে সোম ও মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম জেলায় দু’টি মামলা রুজু হয়েছে। নতুন আইনে মামলা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও।
প্রথম মামলাটি ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার। স্ত্রীকে মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে ধৃত বছর আঠাশের পার্থ মণ্ডলের বাড়ি ঝাড়গ্রাম শহরের রাজ কলেজ কলোনিতে। সোমবার দুপুরে পার্থ তাঁর স্ত্রী কল্যাণী মণ্ডলকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। পড়শিরা কল্যাণীকে উদ্ধার করেন। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। সোমবার রাতে জামাইয়ের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কল্যাণীর বাবা মনোরঞ্জন সাহা। মঙ্গলবার সকালে শহরের পাঁচ মাথা মোড় থেকে পার্থকে ধরে পুলিশ।
ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৮৫ (বধূ নির্যাতন), ১১৫ (২) (মারধর), ১১৭ (২) (মারধর করে গুরুতর জখম) ও ১০৯ (খুনের চেষ্টা) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এ দিনই পার্থকে ঝাড়গ্রাম সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। অভিযুক্তকে একদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। বছর ছ’য়েক আগে কল্যাণী ও পার্থের বিয়ে হয়। তাঁদের বছর পাঁচেকের মেয়ে রয়েছে। টাকা-পয়সা দম্পতির অশান্তি হত।
মাওবাদীদের নাম করে তোলাবাজির উদ্দেশ্যে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে জামবনি থানার পুলিশ। ধৃত বছর সাঁইত্রিশের কৃষ্ণপ্রসাদ মাহাতোর বাড়ি স্থানীয় শুশনি গ্রামে। শুশনিতে সদ্য তৈরি হোম স্টে-র মালিককে ফোনে টাকা চেয়ে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সোমবার রাতে কৃষ্ণপ্রসাদ-সহ তিনজন বাইক নিয়ে সেখানে চড়াও হয়ে ম্যানেজারকে লাল কালিতে হাতে লেখা চিঠি ধরায়। এক লক্ষ টাকা মঙ্গলবারের মধ্যে না দিলে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে অভিযোগ দায়ের করেন ওই ম্যানেজার।
ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১১১ (২বি) (সংগঠিত তোলাবাজি) ও ৩০৮ (৫) (তোলাবাজির উদ্দেশ্যে খুনের হুমকি) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঝাড়গ্রাম সিজেএম আদালত কৃষ্ণপ্রসাদকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে। সরকারি আইনজীবী অনিল মণ্ডল বলছেন, ‘‘নয়া আইনে বিভিন্ন ধারার সঙ্গে উপধারাগুলিতেও নির্দিষ্ট অপরাধের শাস্তির উল্লেখ রয়েছে। ফলে পুলিশকে বাড়তি সতর্কতা নিতে হচ্ছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন, ‘‘সোমবার ও মঙ্গলবার নয়া আইনে দু'টি মামলা রুজু করা হয়েছে। জামবনির ঘটনায় জড়িত বাকিদেরও খোঁজ করা হচ্ছে।’’ পুলিশ সুপার জানান, ভুয়ো মাওবাদী সেজে তোলা চাওয়ার বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ৩০ জন জেলবন্দি রয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় নতুন আইনে প্রথম অভিযোগ দায়ের হয়েছে কেশিয়াড়ি থানায়। একজনের নিখোঁজ থাকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। তাঁর পরিজনেদের দাবি, তাঁকে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন আইনের ১৩৭ (২), ১৪০ (৩) ধারার অধীনে এফআইআর দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।