কার্নিভালের মঞ্চে। নিজস্ব চিত্র
জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে এই প্রথমবার সরকারি উদ্যোগে টুসু কার্নিভালের আয়োজন করা হল।
বুধবার বিকেলে ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি অঞ্চলের গজাশিমূল রাবণপোড়া ময়দানে ওই অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক ছিল ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ ও কুড়মি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল বোর্ড। সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে টুসু মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা করে নিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। এদিন টুসুমণির শোভাযাত্রায় হাঁটেন জেলাশাসক আয়েষা রানি, জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস, গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক চূড়ামণি মাহাতো, কুড়মি উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রথীন্দ্রনাথ মাহাতো প্রমুখ।
টুসু কার্নিভাল দেখতে কিছু পর্যটকও হাজির ছিলেন। সেখানে জঙ্গলমহলের ঝুমুরশিল্পীরা টুসুগান পরিবেশন করেন। টুসু গানের সুরে স্বরচিত জঙ্গলমহলের উন্নয়নগীতি শোনান বিধায়ক চূড়ামণি মাহাতো। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘এই প্রথমবার টুসু কার্নিভালের আয়োজন করা হল। জঙ্গলমহলের সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এমন উদ্যোগ। এ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে আগামী বছর আরও বড় আকারে এই কার্নিভাল হবে।’’
মঙ্গলবার বাঁউড়ির সন্ধ্যা থেকেই জঙ্গলমহল মেতে ওঠে উৎসবের আবহে। শহরের বিদ্যাসাগরপল্লির বাড়িতে মাংস পিঠে তৈরির ফাঁকে সাঁওতালি অভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘মাংস পিঠে মকর পরবের ঐতিহ্য। সারা বছর শ্যুটিংয়ের কাজে যেখানেই থাকি, পরবের দিনে বাড়িতে থাকব। মায়ের হাতের পিঠে খাব। এবার নিজেও পিঠে বানাচ্ছি।’’
ঝাড়গ্রাম পুরসভার উদ্যোগে বুধবার সংক্রান্তির সকালে জেলাশাসকের অফিস চত্বরেও পিঠের স্টল দিয়েছিল পুর এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। সেখানে মাংস পিঠে, ডিমের রস মালাইয়ের মতো পিঠে বিক্রি হয়েছে। পিঠে কিনতে হাজির হয়েছিলেন মানিকপাড়া কলেজের অধ্যাপক রঞ্জিত চৌধুরী, ঝাড়গ্রামে বেড়াতে আসা পর্যটক-দম্পতি তন্ময় ও শ্রেয়সী ঘোষরায়ের মতো অনেকে। পুরপ্রশাসক তথা মহকুমাশাসক (সদর) সুবর্ণ রায় জানান, ডিএম অফিস চত্বরের পাশাপাশি, রবীন্দ্রপার্কের বইমেলা চত্বরেও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা পিঠের স্টল দিয়েছিলেন। এদিন রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের পিঠে খাইয়ে আসেন মহকুমাশাসক সুবর্ণ রায়। গোপীবল্লভপুরে প্রাচীন রীতি মেনে বুলবুলি পাখির লড়াই হয়।