টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তি

কর্মী নেই, ঝাঁপ বন্ধ কাউন্টারের

 টিকিট কাউন্টার রয়েছে। তবে দিনের অধিকাংশ সময়েই বন্ধ থাকে কাউন্টারের ঝাঁপ। অনেক বুকিং ক্লার্কের পদ শূন্য থাকায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার অধিকাংশ স্টেশনে চালু করা যায়নি নতুন কাউন্টারও। অল্প সংখ্যক কাউন্টার খোলা থাকায় দীর্ঘ লাইনে বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share:

বন্ধ: গিরিময়দান স্টেশনে বন্ধ টিকিট কাউন্টার। নিজস্ব চিত্র

টিকিট কাউন্টার রয়েছে। তবে দিনের অধিকাংশ সময়েই বন্ধ থাকে কাউন্টারের ঝাঁপ। অনেক বুকিং ক্লার্কের পদ শূন্য থাকায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার অধিকাংশ স্টেশনে চালু করা যায়নি নতুন কাউন্টারও। অল্প সংখ্যক কাউন্টার খোলা থাকায় দীর্ঘ লাইনে বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা।

Advertisement

যে সব স্টেশনে একাধিক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, সমস্যা সেখানে আরও বেশি। স্টেশনের এক প্রান্তে একটি প্ল্যাটফর্মে কাউন্টার চালু থাকায় বিপাকে প়ড়ছেন যাত্রীরা। সম্প্রতি খড়্গপুর ডিভিশনের রাধামোহনপুর স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ কাউন্টার বন্ধ থাকায় অবরোধ করেন যাত্রীরা। পরে কাউন্টার খোলায় অবরোধ ওঠে। শুঘু রাধামোহনপুর নয়, অন্য স্টেশনগুলিতেও দিনের অধিকাংশ সময়ে একটি বা বড়জোড়় দু’টি কাউন্টার খোলা থাকে বলে অভিযোগ। দিনের ব্যস্ত সময়ে একটি কাউন্টার খোলা থাকলে টিকিট কাটতে দেরি হওয়ায় অনেক ট্রেনও মিস করেন।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমস্যার পিছনে আসল কারণ বুকিং ক্লার্কের অভাব। খড়্গপুর ডিভিশনে ৭০০ জন বুকিং ক্লার্কের পদ রয়েছে। এর মধ্যে ১৮০ জন বুকিং ক্লার্কে পদই ফাঁকা রয়েছে। ক্লার্কের অভাবে বিভিন্ন টিকিট কাউন্টার বন্ধ পড়ে। হাওড়া-খড়্গপুর শাখার বালিচক স্টেশনের উত্তরদিকে একসময়ে টিকিট কাউন্টার থাকলেও বছর কয়েক তা বন্ধ। স্টেশনের উত্তর দিক থেকে আসা যাত্রীদের প্রায় এক কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে টিকিট কাটতে যেতে হয়। অনেক যাত্রী ঘুরপথে না গিয়ে প্ল্যাটফর্ম হয়ে টিকিট কাউন্টারে যেতে গিয়ে টিকিট পরীক্ষকের জরিমানার মুখেও পড়ছেন।

Advertisement

বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “স্টেশনের উত্তর দিক থেকে আসা রেল যাত্রীদের অবস্থা দুর্বিষহ। প্রতিদিন ঘুরপথে টিকিট কেটে ফের উত্তর দিকে স্টেশনে যেতে হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই সমস্যা এড়াতে প্ল্যাটফর্ম ধরে টিকিট কাটতে যাচ্ছেন। টিকিট পরীক্ষকের জরিমানার মুখে পড়ছেন তাঁরা। অথচ উত্তর দিকে ফের টিকিট কাউন্টার খোলা নিয়ে একাধিকবার আবেদন করলেও রেল কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না।”

ডিভিশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাগনান স্টেশনেও সম্প্রতি নতুন টিকিট কাউন্টার তৈরি করা হয়েছে। তবে কর্মীর অভাবে সেই কাউন্টার চালু করা যায়নি। কম সংখ্যক কাউন্টারে দীর্ঘ লাইে দাঁড়িয়েই টিকিট কাটতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। খড়্গপুর-মেদিনীপুর লাইনের গিরিময়দান স্টেশনে ২০১৪ সাল থেকে ডবল লাইন চালু হয়। সেই সময় স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে টিকিট কাউন্টার গড়ে তোলা হয়েছিল। ওই প্ল্যাটফর্মে হাওড়াগামী ট্রেন থামে। অথচ ওই টিকিট কাউন্টারটি প্রতিদিন দুপুর ২টোর পরে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয় যাত্রীদের। ফুটব্রিজ দূরে হওয়ায় অনেকটা পথ ঘুরে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গিয়ে টিকিট কেটে ফের ২ নম্বর স্টেশনে এসে ট্রেন ধরতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। রেল যাত্রী সুভাষ দাস বলেন, “ব্যবসার কাজে প্রায়ই ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে হাওড়াগামী ট্রেন ধরি। কিন্তু দুপুর ২টোর পরে কাউন্টার বন্ধ থাকায় খুব সমস্যা হয়। ফুটব্রিজ দিয়ে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গিয়ে টিকিট কাটতে গিয়ে একদিন ট্রেন মিস হয়ে গিয়েছিল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রেল কেন যে এ ভাবে দিনের অধিকাংশ সময় কাউন্টার বন্ধ রাখছে জানি না।”

এ নিয়ে রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “সত্যি বলতে আমাদের কর্মীর অভাব রয়েছে। তাই বিভিন্ন স্টেশনে কাউন্টার বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ‘অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন’ বসিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement