টাঙানো হচ্ছে ব্যানার। নিজস্ব চিত্র
ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের ভাবনায় নতুন কর্মসূচি ‘যুবশক্তি’র কাজ শুরু করেছে তৃণমূল। জঙ্গলমহলে প্রথম ধাপে সাড়া ভালই।
জেলায় যুবশক্তির সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২২৫০ জন (৮টি ব্লকে আড়াইশো জন করে ও ঝাড়গ্রাম শহরে আড়াইশো)। ১২ জুলাই পর্যন্ত সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলবে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৯৮৭ জন সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। ফিল্ড মেম্বার ও তাঁদের অধীনে সদস্য সংগ্রহ হচ্ছে অনলাইনে। জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবনাথ হাঁসদার দাবি, ‘‘১২ জুলাইয়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যাবে।’’
তৃণমূলের এক সূত্রের ব্যাখ্যা, জঙ্গলমহলে শাসকদলের রাজনীতি থেকে আপাতত নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। এই সময়েই জঙ্গলমহলের রাজনীতিতে অভিষেককে হাজির করতে চায় তৃণমূলের একাংশ। বিভিন্ন এলাকায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া হোর্ডিং-ব্যানার টাঙানো শুরু হয়েছে। কাজ শুরু করেছে যুবশক্তিও। যার পুরোটাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর থেকে।
ঝাড়গ্রামে ইতিমধ্যেই যুবশক্তির ১১ জনের জেলা কমিটি তৈরি হয়েছে। সেখানে আছেন টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি সত্যরঞ্জন বারিক, বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাহালা হাঁসদা, জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা, ঝাড়গ্রাম শহর যুব তৃণমূলের সম্পাদক উজ্জ্বল পাত্রের মতো তরুণ প্রজন্মের নেতা-নেত্রীরা। তাঁরা ডিসি মেম্বার। তাঁদের অধীনে রয়েছেন ৫ জন করে ফিল্ড মেম্বার। প্রত্যেক ফিল্ড মেম্বার ৫০ জন করে যুবশক্তির সদস্য সংগ্রহ করবেন। এমন যুবক-যুবতীদের সদস্য করা হচ্ছে, যাঁদের এলাকায় স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আছে। সহজেই মানুষের সঙ্গে মিশতে পারেন।
এখন ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের দলীয় সংগঠন দেখছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গত লোকসভা ভোটের সময়েও জেলায় দায়িত্বে ছিলেন পার্থ। কিন্তু লোকসভায় ১১ হাজারের কিছু বেশি ভোটে হেরে যান তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সরেন। সেই বিরবাহা এখন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী। তিনি অবশ্য বিজেপির সংগঠন বৃদ্ধি সে ভাবে আটকাতে পারেননি। তৃণমূলের চিন্তা আরও বাড়িয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি ভারতী ঘোষ। কয়েকদিন আগে জেলায় এসে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন ভারতী। প্রাক্তন পুলিশ সুপার হিসেবে ঝাড়গ্রামের রাজনীতি ভারতীর নখদর্পণে। জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, তাই প্রশান্ত কিশোরের দফতরকে এখন ঝাড়গ্রামে বাড়তি মাথা ঘামাতে হচ্ছে।
যুবশক্তি কর্মসূচির এক ডিসি মেম্বার মানছেন, ‘‘ভারতী ও বিজেপি-র মোকাবিলায় যুবশক্তিকেই হাতিয়ার করা হচ্ছে।’’ জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা জানান, যুবশক্তির সদস্যরা জনসংযোগের সঙ্গে মানুষের সুবিধা-অসুবিধাও দেখবেন।