সারিবদ্ধ: কবে থেকে রেল পরিষেবা চালুু হবে, তা এখনও নিশ্চিত হয়। জনহীন খড়্গপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রেন। ছবি: কিংশুক আইচ
আনলক পর্ব পেরিয়ে পুজোর মেজাজে ভাসছে রাজ্য। অবশ্য এখনও অফিস থেকে ব্যবসা সংক্রান্ত নানা কাজে শহর থেকে মহানগরে যেতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। অথচ চলছে না ট্রেন। শহর থেকে মিলছে না বাসও। পুজোর মুখে কয়েকটি বিশেষ ট্রেনের কথা ঘোষণা করেছে রেল। অথচ খোদ রেলশহর থেকেই হাওড়া যেতে কোনও প্যাসেঞ্জার ট্রেন না থাকায় ক্ষোভে ফুঁসছেন যাত্রীরা!
খড়্গপুর শহর থেকে কলকাতায় যাতায়াতে দুর্ভোগে শহরের সর্বস্তরের মানুষ। তবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। শহর থেকে সড়ক যোগাযোগ এখন একমাত্র ভরসা। অথচ শহর থেকে কলকাতায় যেতে নেই কোনও বাস পরিষেবাও। এমনকি, করোনা পর্বের আগে পরিমহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর উদ্বোধন করা কলকাতা-খড়্গপুর বাস পরিষেবা আপাতত বন্ধ। অবশ্য মেদিনীপুর থেকে দু’একটি বাস চলছে কলকাতায়। এখন সেই বাসেই ঠাসা ভিড়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে জেলার নিত্যযাত্রীদের। খড়্গপুর থেকে সাধারণ যাত্রীদের জন্য কোনও ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় নাকাল হতে হচ্ছে যাত্রীদের। করোনা পরিস্থিতিতে এভাবে ভিড় বাসে যাতায়াতে বিপদ দেখছেন নিত্যযাত্রীরা। বাড়ছে সংক্রমণও।
শহরের খরিদার বাসিন্দা অরিন্দম কর্মকার বলেন, “আমি সল্টলেকে একটি আইটি সংস্থায় চাকরি করি। এখন তো অফিস যেতে হচ্ছে। গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে বিপুল খরচ হচ্ছে। ট্রেন ছাড়া কোনও উপায় নেই। আর আমাদের কথা বোঝারও কেউ নেই।’’ শহর থেকে সরাসরি কলকাতাগামী বাস পরিষেবা বন্ধ থাকায় দুর্বিসহ অবস্থা দেখা দিয়েছে। ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে রেল যাত্রী সংগঠনগুলি। খড়্গপুর-মেদিনীপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “রেলের কাছে বহুবার খড়্গপুর, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের জন্য হাওড়া-কলকাতা যাওয়ার সরাসরি ট্রেনের দাবি জানিয়েছি। কোনও সাড়া পাচ্ছি না। পুজোর মুখে যে একটি বিশেষ ট্রেন দিয়েছে তাতে আমাদের কোনও সুরাহা হবে না।’’
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১৬অক্টোবর থেকে ৩০নভেম্বর পর্যন্ত হাওড়া থেকে টাটানগর, রাঁচি ও পুরী রুটে তিনটি বিশেষ ট্রেন দেওয়া হয়েছে। সেগুলি খড়্গপুর হয়ে যাতায়াত করবে। তবে সেই ট্রেন আগে থেকেই ভিড় হবে বলে আশঙ্কা শহরের যাত্রীদের। এর জেরে রেলশহর থেকে কিছু লোকাল ট্রেন চালানোর আবেদন জানাচ্ছে সর্বস্তরের যাত্রীরা। যদিও রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী বলেন, “পুজোর জন্য যে ক’টি বিশেষ ট্রেন ঘোষণা হয়েছে তার বাইরে আমাদের আর কোনও ট্রেনের খবর জানা নেই। খড়্গপুর থেকে হাওড়ার কোনও ট্রেন চলবে কি না এটা রেল মন্ত্রক ঠিক করবে।’’ এমন পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত বাস পরিষেবার দাবি তুলেছে সাধারণ যাত্রীরা। তবে খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “সমস্যা রয়েছে ঠিকই। খড়্গপুর থেকে যে বাসগুলি কলকাতা যাচ্ছিল সেগুলি বন্ধ। আমি এই বিষয়ে পরিবহণ দফতরে চিঠি লিখে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আমি আবারও বিষয়টি নিয়ে পরিবহণ দফতরে কথা বলব।”