সোমবার রাতে খড়্গপুর লোকো শেডে। নিজস্ব চিত্র
ভারতীয় রেলপথে ব্রিটিশ জমানার বাষ্পচালিত ইঞ্জিন বদলে গিয়েছিল ষাটের দশকে। এসেছিল ডিজেল চালিত ইঞ্জিন। তারপরে ডিজেল ইঞ্জিন বদলে হয়েছিল ইলেক্ট্রিক্যাল। এখন ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনকে আরও আধুনিক করে ডিজিটাল করার কাজ চলছে। এত দিন খড়্গপুর-সহ বিভিন্ন রেল কারখানায় সেই কাজ চলছিল। এবার তা শুরু হয়েছে খড়্গপুর লোকো শেডে। খড়্গপুর রেল ডিভিশন সূত্রের দাবিদাবি, দেশের মধ্যে এই প্রথম কোনও লোকো শেডে এই কাজ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে পুরনো তার বদলাতেও হচ্ছে না।
সোমবার রাতে এমনই একটি ইঞ্জিনের যাত্রার সূচনা করলেন খড়্গপুরের ডিআরএম মহম্মদ সুজাত হাসমি। মাস খানেক ধরে ওই রেল ইঞ্জিনকে ডিজিটাল করার কাজ চলেছে। এর সঙ্গে যুক্ত খড়্গপুরের ডিভিশনাল ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার দীপাঞ্জন সরকার বলেন, “দেশের ৭৭টি লোকো শেডের মধ্যে প্রথমবার খড়্গপুরেই পুরনো ইঞ্জিনকে মাইক্রো-প্রসেসর নির্ভর ডিজিটাল করতে পেরেছি আমরা। রেল কারখানায় যাবতীয় মোটর খুলে ও তার বদল করে এই কাজ হয়। তবে এখানে তার না বদলেই এই কাজ হয়েছে। ৩০ দিন সময় লেগেছে। আশা করছি আরও এমন ইঞ্জিন আমাদের হাতে ডিজিটাল হবে।”
খড়্গপুর রেল সূত্রে খবর, এক্ষেত্রে রিলে নির্ভর গোলযোগ নির্ণয়ের ইঞ্জিন বদলে মাইক্রো-প্রসেসর নির্ভর গোলযোগ নির্ণয়ের ইঞ্জিন গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলে দ্রুত ইঞ্জিনের গোলযোগ নির্ণয় যেমন সম্ভব হবে তেমনই দ্রুত মেরামতও হবে। জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনের ৩৩টি ইলেক্ট্রো মেক্যানিক্যাল রিলেকে সরিয়ে দিয়ে ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিট ব্যবহার করা হয়েছে। তার ফলে ওই ইঞ্জিন পুরোপুরি ডিজিটাল হয়েছে। এর জেরে ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হবে। জিপিএসের সুবিধাও পাওয়া যাবে। এর আগেও গত সেপ্টেম্বরে খড়্গপুর লোকো শেডে আরও দু’টি পুরনো ইঞ্জিন এই ভাবেই ডিজিটাল হয়েছিল। এখন খড়্গপুর ডিভিশনের হাতে ২০২টি ইঞ্জিন রয়েছে। তার মধ্যে ১২৬টি ডিজিটাল। বাকি ৭৬টি ইঞ্জিন পুরনো রিলে নির্ভর। তার মধ্যে থেকেই তিনটি ইঞ্জিনকে ডিজিটাল করলেন খড়্গপুর ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়রেরা। এই কাজ আরও বেশি করে উল্লেখযোগ্য কারণ এটি হয়েছে লোকো শেডে। সাধারণত যেখানে ইঞ্জিনের ছোট রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয়।
খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার শচীন কুমার বলেন, “খড়্গপুর লোকো শেডে পুরনো ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনের আধুনিকীকরণ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এর আগে এখানে আরও দু’টি ইঞ্জিনে এই আধুনিকীকরণ করা হয়েছিল। তৃতীয়বার সেই কাজ সফল হওয়ায় ডিআরএম নিজে পরিদর্শন করে ইঞ্জিনের সূচনা করেছেন। এমন কাজ করতে পেরে আমরা খুশি।”