মেদিনীপুর শহরে তৃণমুলের প্রতিবাদ মিছিল। শনিবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবাদের ভাষা হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য। আরজি কর কাণ্ডে পথে নামার আগে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে তেমনই নির্দেশ পাঠানো হল জেলা থেকে ব্লকে। সেই মতো শনিবার থেকেই আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে ও বাম-বিজেপির ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে পথে নামতে শুরু করেছে তৃণমূল। এ দিন ব্লকে ব্লকে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে, রবিবার হবে অবস্থান বিক্ষোভ।
শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় অনেক জায়গায় মিছিল করে আরজি কর কাণ্ডে দোষীর ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। রবিবারের অবস্থান বিক্ষোভের তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বর নির্দেশ পৌঁছয় জেলায়। তারপর ব্লকস্তরে, সেখান থেকে অঞ্চলে। আরজি কর কাণ্ডে দোষীর ফাঁসি ও দ্রুত বিচার চেয়ে শুক্রবারই কলকাতায় মিছিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মিছিল শেষে বক্তব্যও রাখেন। দলের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্যের নির্যাস পাঠিয়ে দেওয়া হয় জেলা নেতৃত্বকে। জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘আরজি কর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, সেটাই তুলে ধরতে হবে প্রতিবাদ মিছিল ও অবস্থান বিক্ষোভ মঞ্চ থেকে। এ নিয়ে দলের তরফে নির্দিষ্ট গাইডলাইন বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তার বাইরে কিছু বলা যাবে না।’’
শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রতি ব্লকেই প্রতিবাদ মিছিল করেছে তৃণমূল। মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলের সামনে থেকে শুরু হয় এই মিছিল। নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়, জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা প্রমুখ। দীনেনের বক্তব্য, আরজি করের আন্দোলনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি চক্রান্ত করছে। সেই চক্রান্তের প্রতিবাদে তৃণমূল পথে নেমেছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি চাইছি।’’ মিছিল শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করেছে। গড়বেতা ১ ব্লকের ১২ টি অঞ্চলেই মিছিল করে তৃণমূল। আরজি কর কাণ্ডে দোষীর ফাঁসির দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে মিছিলে হাঁটেন তৃণমূল কর্মীরা। চন্দ্রকোনা রোডে বিদ্যাসাগর মঞ্চ থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করে তৃণমূল। মিছিল হয় গোয়ালতোড়েও।
ঘাটাল শহরে মিছিলে ছিলেন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুতাইত, শহর সভাপতি অরুণ মণ্ডল প্রমুখ। ঘাটাল ব্লকের বরদা চৌকান এলাকায় মিছিলে অংশ নেন ব্লক সভাপতি দিলীপ মাজি, শঙ্কর দোলইরা। সবংয়ের তেমাথানিতে মিছিলে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আবু কালাম বক্স। মানসের দাবি, ‘‘নারী সুরক্ষায় অন্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ অনেক এগিয়ে।’’ খড়্গপুর শহরে ঝাপেটাপুর থেকে কৌশল্যা পর্যন্ত তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলে ছিলেন পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ। তবে দেখা যায়নি প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীকে। প্রদীপ বলেন, ‘‘পারিবারিক কাজে কলকাতায় আছি। কাল আমার ওয়ার্ডে মিছিল করব।’’ দেবাশিসও বলেন, ‘‘আমি ওয়ার্ডের মিছিলে ছিলাম।’’ তবে দেবাশিসের স্ত্রী পুর-প্রতিনিধি নমিতা চৌধুরী ছিলেন পুরপ্রধানের মিছিলে।
বিকেলে ঝাড়গ্রাম শহরের রূপছায়া মোড়ে তৃণমূলের জেলা কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে জেলা শহরের মিছিল শুরু হয়ে পাঁচমাথার মোড়, শিবমন্দির মোড়, কোর্ট রোড, সুভাষ পার্ক হয়ে ফের পাঁচমাথা মোড় ঘুরে ছিমছাম মোড় হয়ে জেলা কার্যালয় চত্বরে শেষ হয়। নেতৃত্বে ছিলেন সাংসদ কালীপদ সরেন, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা প্রমুখ। জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু নয়াগ্রামের বিধায়কও। তাঁর নেতৃত্বে নয়াগ্রাম ব্লকের মিছিল হয় খড়িকামাথানিতে।