বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের এক মাস হয়ে গেল। অথচ বিরোধীদের উপর হামলার ঘটনায় আর দাঁড়ি পড়ছে না।
রবিবার সকালে দলীয় অফিসেই আক্রান্ত হন চন্দ্রকোনার প্রাক্তন বিধায়ক, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য গুরুপদ দত্ত। চন্দ্রকোনা শহরে সিপিএমের এই জোনাল কাযার্লয় ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকে বন্ধই। এ দিনই অফিস খোলার পরই তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সকাল আটটা নাগাদ তৃণমূলের স্থানীয় নেতা লক্ষ্মণ কামিল্যা দলবল নিয়ে গুরুপদবাবুকে চড়-থাপ্পড় মেরে অফিস থেকে টেনে বের করে দেন বলে অভিযোগ।
জখম গুরুপদবাবুকে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গুরুপদবাবু বলেন, “আমি পার্টি অফিসে বসে খবরের কাগজ পড়ছিলাম। হঠাৎ লাঠি-রড নিয়ে এসে তৃণমূলের লোকজন আমাকে বেধড়ক মারধর করে। মাটিতে ফেলে দিয়ে অফিস বন্ধ রাখার ফতোয়া দেয়।’’ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হলেও রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। আর চন্দ্রকোনা-২ ব্লক সভাপতি অমিতাভ কুশারীর বক্তব্য, “ঘটনাটি শুনেছি। কারা জড়িত খোঁজ নিচ্ছি।’’
শনিবার বিকেলে আবার পিংলার পিণ্ডরুই গ্রামে এক সিপিএম কর্মীকে বিদ্যুতের তার দিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবার পিংলা থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানানো হয়েছে, গোপাল মাইতি নামে ওই বাম কর্মীকে পিণ্ডরুই বাজারের রাস্তায় আটকে তৃণমূল কর্মীরা মারধর করেছে। গুরুতর জখম গোপালবাবুকে পিংলা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়।
পিংলার তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রের পৈতৃক বাড়ি এই পিণ্ডরুইতে। সিপিএমের অভিযোগ, ওই গ্রামের সকলকে তৃণমূলে ভোট দিতে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। গোপাল মাইতি ও তাঁর দাদা তুলসী মাইতি সিপিএম কর্মী হওয়ায় তাঁদের বারবার ভোট দিতে নিষেধ করেছিল তৃণমূল। কিন্তু নিষেধ সত্ত্বেও ভোট দিয়েছিলেন গোপালবাবুর পরিবারের সকলেই। অভিযোগ তার জেরেই এই হামলা। যদিও ঘটনাটিকে গ্রাম্য বিবাদ বলে দাবি করছে তৃণমূল। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “একজনকে মারধর করা হয়েছে এটা ঠিক। তবে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এটা গ্রাম্য বিবাদ। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।