প্রতীকী ছবি।
উদ্দেশ্য জনজাতির মানুষের কাছে পৌঁছনো। ওই অংশের হারানো ভোট ফেরানো। সেই লক্ষ্যেই নতুন এক জনসংযোগ কর্মসূচি শুরুর পরিকল্পনা করছে তৃণমূল। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে এই কর্মসূচির পরিকল্পনা বলে দলের এক সূত্রে খবর। সব ঠিকঠাক থাকলে কর্মসূচির নাম হতে পারে, ‘তফসিলির সংলাপ’। শীঘ্রই রাজ্য জুড়ে এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা।
পিকে-র পরিকল্পনাতেই গত বছর ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু করেছে তৃণমূল। পরে জনসংযোগে শুরু হয়েছে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচি। তফসিলি সম্প্রদায়ের ভোট ফেরাতে এ বার নতুন ওই জনসংযোগ কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে তৃণমূল। উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনা নিয়ে দেশ এখন উত্তাল। দলিত নির্যাতিতার পরিবারের পাশে সকলেই। এই আবহে বিজেপি-বিরোধী আন্দোলনে আরও শান দিতে চাইছে এ রাজ্যের শাসক দল। জানা যাচ্ছে, প্রস্তাবিত নতুন ওই জনসংযোগ কর্মসূচির লক্ষ্য শুধুমাত্র জনজাতির মানুষের কাছে পৌঁছনোই নয়, তাঁদের বিজেপির দলিত বিরোধী নীতি এবং কার্যকলাপ প্রচার করা। প্রচার- গাড়িতে পোস্টার সাঁটানো থাকতে পারে। সেখানে লেখা থাকতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা, ‘আমরা তফসিলি জাতি এবং অনান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ করি না’।
জানা যাচ্ছে, প্রচার-গাড়িতে চেপে তফসিলি অধ্যুষিত এলাকায় পৌঁছবেন দলের বাছাই করা কর্মীরা। তাঁরাও তফসিলি সম্প্রদায়ের। টানা ২০ দিন ধরে এই প্রচারাভিযান চলার কথা। এই সময়ের মধ্যে ২৫১টি প্রচার-গাড়ি বাংলা জুড়ে ঘুরবে। লক্ষ্য রাজ্যের ১ কোটি ৫ লক্ষ তফসিলি মানুষের কাছে পৌঁছনো। কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন দলের তফসিলি সম্প্রদায়ের দু’হাজার কর্মী। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রপিছু তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত ১০ জন করে কর্মীর নাম চাওয়া হয়েছিল। তাঁদেরই এই কর্মসূচিতে যুক্ত করা হবে।
তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, পিকে-র সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত লোকসভা নির্বাচনে হাতছাড়া হওয়া তফসিলি ভোট ফেরাতে পারলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ২০০-রও বেশি আসন পাবে। সব দিক খতিয়ে দেখতে আগেই তফসিলি সংরক্ষিত আসনের তৃণমূল বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেছেন পিকে। গত লোকসভা ভোটের নিরিখে, রাজ্যে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের ভোটের হিসেব ধরলে তৃণমূলের থেকে প্রায় ৮ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছে বিজেপি। দেখা গিয়েছে, বিজেপি যে সব আসনে এগিয়ে আছে, তার বেশিরভাগ তফসিলি জাতি ও জনজাতির জন্য সংরক্ষিত।
কেন এই পরিস্থিতি? দলের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ণ অনুযায়ী, এই অংশের দলীয় জনপ্রতিনিধিদের জনবিচ্ছিন্নতাই এর অন্যতম কারণ। এই জনবিচ্ছিন্নতা দলের অন্দরে উদ্বেগও বাড়িয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে এর অনেকটা প্রভাব পড়েছে। দেখা গিয়েছে, প্রায় সব বিধানসভা কেন্দ্রেই জনজাতির সমর্থনে কমবেশি ঘাটতি হয়েছে তৃণমূলের। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে তফসিলি মানুষের হারানো সমর্থন ফেরাতেই এ বার এই নতুন কর্মসূচি।