প্রতীকী ছবি।
তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের ডানা ছাঁটা হয়েছে। কেশপুরে এ বার ডানা ছাঁটা শুরু হল সঞ্জয় ঘনিষ্ঠদেরও।
সূত্রের খবর, কেশপুর কলেজের পরিচালন সমিতি থেকে অপসারিত হতে চলেছেন শুভ্রা দে সেনগুপ্ত। শুভ্রা কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং সঞ্জয়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সরকার মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে কলেজের বর্তমান পরিচালন সমিতিতে তিনি রয়েছেন। এই সমিতির মেয়াদ ফুরোচ্ছে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই উচ্চশিক্ষা দফতর এক নির্দেশিকা জারি করেছে। ডাকযোগে ওই নির্দেশিকা শীঘ্রই কলেজে পৌঁছবে। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি কে হবেন, সরকার মনোনীত প্রতিনিধি কারা হবেন তা স্পষ্ট জানানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। এই নির্দেশ অনুযায়ী, পরিচালন সমিতির সভাপতি হবেন স্থানীয় বিধায়ক শিউলি সাহা। বর্তমান পরিচালন সমিতিতেও তিনিই সভাপতি রয়েছেন। নতুন সমিতিতে সরকার মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন চিত্তরঞ্জন গড়াই এবং শেখ ওবাইদুর রহমান। উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন প্রদ্যোৎ পাঁজা। চিত্তরঞ্জন কেশপুরের প্রবীণ তৃণমূল নেতা। এক সময়ে দলের ব্লক সভাপতি ছিলেন। ওবাইদুর কেশপুর কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি শিউলি অনুগামী বলেই পরিচিত। প্রদ্যোৎ এক সময়ে কেশপুরে দলের যুব সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। তিনিও শিউলি অনুগামী। সম্প্রতি সঞ্জয়ের জায়গায় কেশপুর ব্লক তৃণমূলের নতুন সভাপতি হয়েছেন উত্তম ত্রিপাঠী। উত্তমও স্থানীয় বিধায়ক শিউলি সাহার অনুগামী বলে পরিচিত। শুভ্রার অপসারণের পিছনে শিউলির হাত রয়েছে বলেই গুঞ্জন কেশপুরে। যদিও এ প্রসঙ্গে শিউলির দাবি, ‘‘ওই নির্দেশ উচ্চশিক্ষা দফতরের। দফতর যাঁদের যোগ্য মনে করেছে, তাঁদেরই পরিচালন সমিতিতে রেখেছে।’’ শিউলি মানছেন, ‘‘নির্দেশিকার বিষয়টি জানি। ওখানে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা আমার খুবই পরিচিত।’’
সূত্রের খবর, এবার কেশপুর কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হওয়ার কথা ছিল সঞ্জয় পানের। আর সমিতিতে সরকার মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে থাকার কথা ছিল শুভ্রা দে সেনগুপ্ত এবং শেখ আবদুল্লার। এ সংক্রান্ত নির্দেশও আগে কলেজে এসেছিল। তৃণমূলের ব্লক সভাপতির পদ থেকে সঞ্জয়ের অপসারণের পরে ফের নতুন নির্দেশ আসতে চলেছে। আবদুল্লা এক সময়ে কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি সঞ্জয় অনুগামী বলে পরিচিত। তৃণমূলের এক সূত্র মানছে, শিউলির সঙ্গে কোনও দিনই বনিবনা ছিল না সঞ্জয়ের। শুভ্রাকেও এড়িয়ে চলতেন শিউলি। অন্যদিকে, শুভ্রা বরাবর সঞ্জয়ের অনুগামী।
শুভ্রা বলেন, ‘‘কেন আমাকে পরিচালন সমিতিতে রাখা হয়নি আমি জানি না। আমি এ নিয়ে কিছু বলতেও পারব না!’’ এবার আপনারই তো কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হওয়ার কথা ছিল? কিন্তু তা তো হচ্ছে না? সঞ্জয়ের জবাব, ‘‘আমি ওই নির্দেশের ব্যাপারে কিছু জানি না। জানার চেষ্টাও করিনি! আগ্রহও নেই!’’
কেশপুর কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়া বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষা দফতর এক নির্দেশ জারি করেছে বলে শুনেছি। নির্দেশ এলে যে পদক্ষেপ করার করব।’’ সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি কলেজের নতুন পরিচালন সমিতির প্রথম বৈঠক হতে পারে।