সোমবার তমলুকের বানপুকুর এলাকায় মিছিলে শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তৃণমূল এবং বিজেপি-র কর্মসূচি। উপলক্ষ, ভারত ছাড়ো আন্দোলনের স্মরণ দিবস পালন। সেই কর্মসূচি ঘিরেই উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে। গেরুয়া শিবিরের মিছিলে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দেখতে পেয়ে শাসকদলের মিছিল থেকে স্লোগান উঠল, ‘গদ্দার হটাও’। তাতে পাল্টা স্লোগান এল বিজেপি-র মিছিল থেকেও— ‘ভারত মাতা কি জয়’।
সোমবার তমলুকের বানপুকুর এলাকায় সাময়িক উত্তেজনা ছড়ালেও তা ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। প্রায় একই সময় শহিদ মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তিতে মাল্যদান কর্মসূচি ছিল তৃণমূল এবং বিজেপি নেতৃত্বের। তৃণমূলের মিছিলে নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। অন্য দিকে, বিজেপি-র মিছিলের সামনে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে।
সোমবার তমলুক আদালতের কাছে বানপুকুর এলাকায় মাতঙ্গিনীর মূর্তিতে তৃণমূল প্রথমে মালা দিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় সেখানেই শুভেন্দুর নেতৃত্বে মিছিল করে আসছিলেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। দু’দলের কর্মী-সমর্থকরা পাশাপাশি হতেই তৃণমূলের ভিড় থেকে আচমকাই স্লোগান ওঠে ‘গদ্দার হঠাও’। এর পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিজেপি সমর্থকেরাও উত্তেজিত হয়ে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলে পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। ওই ঘটনার সময় মিছিল নিয়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিলেন শুভেন্দু।
মিছিলের নেতৃত্বে শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
তবে শাসক-বিরোধী, দু’দলের এই কর্মসূচি ঘিরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বানপুকুর এলাকায় আগে থেকেই বিশাল বাহিনী মোতায়েন করেছিল তমলুক থানার পুলিশ। ফলে সাময়িক উত্তেজনা ছড়ালেও তা নিয়ন্ত্রণ হারায়নি। যদিও মিছিল ঘিরে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তাঁর দাবি, ‘‘কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। আগাম কর্মসূচি অনুযায়ী ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করছে তৃণমূল। এই আন্দোলনে ‘গাঁধীবুড়ি’ মাতঙ্গিনী হাজরার আত্মবলিদানকে স্মরণ করেই তাঁর মূর্তিতে প্রতি বছরের মতো এ বারও মাল্যদান করা হয়েছে। তবে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দু’দলের কর্মসূচি থাকায় কিছুটা ভিড় জমে গিয়েছিল। তবে কোনও বিশৃঙ্খলাই ঘটেনি।’’ অন্য দিকে, এই কর্মসূচি ঘিরে কোনও রকম সমস্যা হয়নি বলেই পাল্টা দাবি করা হয়েছে বিজেপি-ও।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর নাম না করলেও তিনিই যে তৃণমূলের ওই স্লোগানের লক্ষ্য— তা নিয়ে সন্দেহ নেই। বস্তুত, এর আগেই বহু বার শুভেন্দুকে ‘গদ্দার’ বলে অভিহিত করেছে তৃণমূল।