কোথায় পাব তারে!

Advertisement

বিশ্বসিন্ধু দে

বেলদা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৬
Share:

শুশিন্দায় দলীয় কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র

বিধায়ক বেরোলেন জনসংযোগে। সঙ্গে ‘ভিলেজ ভিজিট কিট’। সেখানে রয়েছে ‘ভিলেজ ইনফ্লুয়েন্সারদে’র নাম।

Advertisement

তালিকায় আছে চারজনের নাম। তিনজনের সঙ্গে দেখা হল। সকলের সঙ্গে কথা বললেন বিধায়ক। গ্রামের একজনের বাড়িতে গিয়ে রুটি, ডাল, আনাজ আর ডিমের তরকারিও খেলেন। কিন্তু তালিকায় থাকা একজনের তো খোঁজই মিলছে না! কপালে ভাঁজ নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ ও তাঁর সঙ্গীদের। শুরু হল ফোনপর্ব। স্থানীয় নেতা, বিধায়কের সঙ্গী সকলেই ফোন করে চললেন নাগাড়ে। সন্দীপ দোলাই বলে কাউকে চেনেন কি? পেশায় সহ শিক্ষক। খোঁজ দিতে পারলেন না কেউ। অগত্যা আশা ছাড়লেন বিধায়ক। তালিকায় বাকি তিনজনের ফোন নম্বর থাকলেও সন্দীপের নামের পাশে লেখা ছিল শূন্য।

শুক্রবার বেলদা ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এমনই ছিল নারায়ণগড়ের বিধায়কের জনসংযোগ। যা দেখে নারায়ণগড়ের বিজেপির মধ্য মণ্ডলের সভাপতি সুভাশিস মহাপাত্র বলেন, ‘‘এলাকায় সন্দীপ দোলাই নামে কেউ আছেন বলে জানা নেই। উপর থেকে নাম এলে এমন ভুয়োই হবে।’’ ‘অস্বস্তি’ চাপতে বিধায়ক শুধু বললেন, ‘‘মিহিরকে (ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ) বলেছি, তালিকায় থাকা নামের ওই শিক্ষকের খোঁজ করতে।’’ আর মিহিরের মন্তব্য, ‘‘খোঁজ চলছে। খোঁজ পেলেই পরবর্তী জনসংযোগ কর্মসূচিতে তাঁর কাছে যাওয়া হবে।’’

Advertisement

সম্প্রতি নানা জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। তার মধ্যে অন্যতম ‘দিদিকে বলো’ । ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ অনুযায়ী এ কর্মসূচি বলে অনুমান রাজনৈতিক মহলের। নির্দেশ মেনে গাড়ি দূরে রেখেই এ দিন বেলদায় জনসংযোগে পৌঁছেছিলেন বিধায়ক। তালিকায় ছিল চারজনের নাম। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অলোক ভট্টাচার্য, ব্যবসায়ী তরুণ দাস, অধ্যাপক স্বপন সাহু। আর ছিল সন্দীপের নাম। প্রথমে শুশিন্দা বুথের নাগরিক বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অলোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে গিয়ে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন, অভাব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চান। অলোক বিধায়ককে জানান, শাসক দলের অনেককেই এলাকার মানুষ পছন্দ করেন না। যা ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলছে। এরপর প্রদ্যোত গিয়েছিলেন ব্যবসায়ী তরুণের বাড়ি। তিনি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। দু’জনের বাড়িতে কর্মসূচি সেরে বুথ এলাকার অজয় শীটের বাড়িতে দুপুরের খাওয়াদাওয়া সারেন বিধায়ক ও অন্যেরা। পরে দেউলি বুথ এলাকার বাসিন্দা বেলদা কলেজের অধ্যাপক স্বপনের বাড়িতে যান। সেখানে স্থানীয় কয়েকজন মহিলা ও পুরুষ বিধায়কের কাছে এলাকার জল নিকাশি ও রাস্তা তৈরি এবং একশোদিনের কাজের টাকা না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। অনেকে নারায়ণগড় ব্লকে দলের দুই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও সরব হন বিধায়কের কাছে। স্থানীয় বাসিন্দা পূর্ণচন্দ্র সেন বলেন, ‘‘এলাকার সমস্যার কথা জানিয়েছি। বিধায়ক আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’’

এই গোটা পর্বে বারবারই সন্দীপকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। বেলদা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান যূথিকা পাল প্রধান বলেন," এই নামের কোনও শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। পঞ্চায়েত সদস্যেরাও বলতে পারেনি।’’ অগত্যা তিনজনের সঙ্গে কথা বলেই পতাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফেরেন বিধায়ক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement