উপেক্ষিত করোনা বিধি। মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীর সভায় ভিড়। নিজস্ব চিত্র।
করোনা দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে কার্যত লকডাউন জারি করেছে রাজ্য সরকারা। বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে যে কোনও জমায়েতে। কিন্তু সেই সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষা করে রাজনৈতিক সভা করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে। একজন জনপ্রতিনিধির এমন আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। ওই বিধায়কের দায়িত্ববোধ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী শিবিরও।
অভিযোগের তির মহিষাদলের বিধায়ক তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তিলক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। শনিবার মহিষাদলের সরকারি মুক্তমঞ্চে দু’শোরও কর্মী নিয়ে দলের বর্ধিত কর্মিসভা করেন বিধায়ক। রাজ্য জুড়ে একাধিক বিধিনিষেধ বলবৎ রয়েছে। জেলার বেশ কয়েকটি অঞ্চলকে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে পঞ্চাশের বেশি লোকজন না থাকার নির্দেশও রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা রয়েছে রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও। সে সবের তোয়াক্কা না করেই বিধায়কের দলীয় কর্মসূচি পালন নিয়ে সুরক্ষা বিধি অগ্রাহ্য করার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। সভাতে মাস্ক না পরে ঘুরতেও দেখা গিয়েছে লোকজনকে। ছিল না শারীরিক দূরত্ব বৃদ্ধি মানার বালাই। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জনপ্রতিনিধির কাজ জনহিতে কাজ করা। কিন্তু তিনিই কোভিড সুরক্ষা বিধি না মেনে এলাকার মানুষকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। তাদের প্রশ্ন, সরকারি মুক্তমঞ্চে এতজন উপস্থিত থাকার অনুমতি প্রশাসন দিল কী করে? তা হলে কি শাসক দলের প্রভাবেই স্থানীয় প্রশাসন অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে?
তবে এই প্রথম নয়, মহিষাদলের বিধায়কের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। জেলা নেতৃত্বের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই একের পর এক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অনাস্থায় তিনি উস্কানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁর সঙ্গে মতের অমিল হলে দলীয় নেতা-কর্মীকে ‘বিজেপি’ তকমা দিয়েছেন। এ সব দেখে দলের কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, মহিষাদলে কার্যত একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন বিধায়ক।
যথারীতি বিধায়কের এই আচরণকে কটাক্ষ করেছে বিরোধী শিবির। মহিষাদলের বিজেপি নেতা বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ শাসক দলের তৈরি নিয়ম তাদের নেতা বা কর্মীই ভেঙে দিচ্ছে। এটাই আসলে তৃণমূলের সংস্কৃতি। যেখানে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকার নির্দেশ দিচ্ছেন সেখানে তাঁর দলের নেতা-কর্মীরাই সেটা মানতে চাইছে না। তা হলে সাধারণ মানুষ কী করবে?’’
অভিযুক্ত বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীকে এ বিষয়ে ফোন করা হলে অন্য একজন ফোন ধরে বলেন, ‘‘বিধায়ক ব্যস্ত আছেন।’’