প্রতীকী ছবি
রাতে এলাকায় এসে সিপিএমের এক নেতার সঙ্গে নাকি দেখা করেছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। এমনই জল্পনাকে ঘিরে শোরগোল পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের চরকায়। এমনকী, দলের একাংশ কর্মীর কাছেই ঘেরাও হতে হয়েছে তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি উত্তম ত্রিপাঠীকে। খবর পৌঁছেছে শাসক দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে। সব শুনে চরম জেলা নেতৃত্ব।
দলেরই একাংশ কর্মীর কাছে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ঘেরাও হলেন কেন? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘কেশপুরের চরকায় সামান্য একটা ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তেমন বড় কিছু নয়। বিস্তারিত জানি না। খোঁজ নিচ্ছি।’’ মঙ্গলবার রাতে উত্তম নাকি ওই এলাকার এক সিপিএম নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন? সে নিয়েই নাকি একাংশ কর্মীর ক্ষোভ? অজিতের জবাব, ‘‘এমন কোনও খবর আমার কাছে নেই। তবে এখন অনেকেই তো তৃণমূলে যোগ দিতে চাইছেন।’’ চরকার বাসিন্দা ওই সিপিএম নেতার নাম নিয়ামত হোসেন। নিয়ামত কেশপুরের দাপুটে সিপিএম নেতা। দলের জেলা কমিটির সদস্য।
তৃণমূলের একাংশের দাবি, মঙ্গলবার রাতে চরকায় গিয়ে নিয়ামতের সঙ্গে দেখা করেছেন উত্তম। যদিও উত্তম সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। আবার নিয়ামতও দাবি করেছেন, কোনও তৃণমূল নেতার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। চরকা থেকে বেরনোর সময়ে দলের একাংশ কর্মীর কাছে ঘেরাও হন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি উত্তম। ঘেরাওয়ের সময়কার ভিডিয়ো ফুটেজ এক সূত্র মারফৎ তৃণমূলের একাংশ জেলা নেতার কাছে পৌঁছেছে। ওই ভিডিয়োয় (ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) দেখা যাচ্ছে, যে গাড়িতে বসে রয়েছেন উত্তম এবং তাঁর সঙ্গীরা, সেই গাড়ি ঘিরে রেখেছেন তৃণমূলের বেশ কয়েকজন কর্মী। উত্তমের উদ্দেশে ওই কর্মীরা বলছেন, ‘‘রাতে হার্মাদদের সঙ্গে বৈঠক? নিয়ামতের কাছে এসে ভাল করলে না কিন্তু। আমাদের ভুল হয়েছে (তৃণমূল করা)।’’
তবে তিনি যে মঙ্গলবার রাতে চরকায় গিয়েছিলেন, তা মানছেন উত্তমও। তিনি বলেন, ‘‘চরকায় একটা জলসা ছিল। আমি দলের ব্লক সভাপতি। ব্লকের কোনও এলাকায় উৎসব-অনুষ্ঠান হলে উদ্যোক্তারা আমায় ডাকেন। যেতে হয়।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য নিয়ামতও বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে চরকায় একটি জলসা হয়েছে। সেখানে তৃণমূলের কয়েকজন এসে থাকতে পারেন। তবে আমার কাছে কেউ আসেননি। আমি সিপিএমেই আছি। থাকব।’’ প্রসঙ্গত, নিয়ামতের ছেলে মতাহার অবশ্য সম্প্রতি সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এখন এলাকায় তৃণমূলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায়। চরকায় গিয়ে কোনও সিপিএম নেতার বাড়ি যাননি, তা-ও কর্মীর বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল কেন? তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি উত্তমের জবাব, ‘‘আমাকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়নি। সবটাই রটনা। দ্বিতীয়ত, ওই রাতে আমি কোনও সিপিএম নেতার বাড়ি যাইনি। কেউ ভুল বুঝে থাকতে পারেন।’’