Tamluk

‘অনুগত সৈনিকে’ কোপ কেন, ধন্দে তমলুক 

পুরপ্রশাসক রবীন্দ্রনাথকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিদায়ী পুরসভার উপপুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়কে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৪১
Share:

নতুন প্রশাসককে স্বাগত।

দলবদলের স্রোতে গা ভাসাননি। যাননি তৃণমূলে থাকাকালীন শুভেন্দু অধিকারীর অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে। পূর্ব মেদিনীপুরের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বরাবর তৃণমূলের কর্মসূচি হাজির থাকা এমন নেতা রবীন্দ্রনাথ সেনকে তাই পুর প্রশাসকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।

Advertisement

তমলুক পুরসভার প্রশাসক বোর্ডে রদবদল হয়েছে সোমবার। পুরপ্রশাসক রবীন্দ্রনাথকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিদায়ী পুরসভার উপপুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়কে। আর গত আট মাস ধরে থাকা দুই প্রশাসক বোর্ডের সদস্য বাড়িয়ে সাতজন করা হয়েছে। যা নিয়ে দলের একাংশের পাশাপাশি ক্ষুদ্ধ খোদ রবীন্দ্রনাথ। মঙ্গলবার তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে কোনও কিছু না জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমার মনে হয় এই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোচরে নেই। তিনি আমাকে যেভাবে জানেন, তা জানলে এমন সিদ্ধান্ত নিতেন না।’’

বর্তমানে শুভেন্দু বিরোধী শিবিরের নেতা বলে পরিচিত রবীন্দ্রনাথ সেন দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে তমলুক পুরসভার কাউন্সিলর এবং ১৮ বছর ধরে পুরপ্রধানের পদ সামলেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে কংগ্রেস ও পরে তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে ৪১ বছর কাউন্সিলর এবং ১৮ বছর পুরপ্রধান হিসাবে যুক্ত ছিলাম। নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গেই কাজ করেছিলাম। এমন বয়সে এই এসে এই সিদ্ধান্ত শুনতে হচ্ছে। আমি মর্মাহত।’’ নতুন প্রশাসক দীপেন্দ্রনারায়ণ অবশ্য বলছেন, ‘‘পরিবর্তনের বিষয়ে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে রাজনীতির তো কোনও বিষয় নেই। পুরসভার কাজের যে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা যথাযথ পালন করব।’’

Advertisement

কিন্তু কেন এমন বদল!

সেই উত্তর তাঁদের কাছে নেই বলে দাবি স্থানীয় নেতৃত্বের। যদিও দলের এটি একটি সূত্রের খবর, পুরপ্রধান হিসাবে থাকাকালীন পুরসভার কাজের বিষয়ে তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থা পিকের (প্রশান্ত কিশোর) টিমের কাছে রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে শহর তৃণমূল নেতৃত্ব নালিশ করেছিলেন। প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন পদে রবীন্দ্রনাথ নিযুক্ত হওয়ার পরে তৃণমূলের একাংশ নেতৃত্ব তাঁর বিরোধিতা শুরু করেছিলেন। এর জেরে শহর তৃণমূলের সংগঠনে বিভাজনও ঘটে বলে অভিযোগ।

বিরোধী নেতৃত্বদের মধ্যে মধ্যে থাকা তমলুক শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বনাথ মহাপাত্র-সহ তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা গত ৭ জানুয়ারি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাই পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন পদ থেকে রবীন্দ্রনাথকে সরিয়ে দিয়ে দলের বিক্ষুদ্ধ অংশকে শীর্ষ নেতৃত্বে বার্তা দিয়েছেন বলেও মনে করা হচ্ছে।

সামনেই নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা। সেই সভা যাবেন কি না জানতে চাওয়া হলে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমি তো তৃণমূলেই রয়েছি। ডাকলে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় যাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement