অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

বাড়ি তৈরির টাকা হাতানোর নালিশ

এক উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধে। ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়ার পেটবিন্ধি পঞ্চায়েতের মহাপাল গ্রামের এই ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসকদলের নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০০:৪০
Share:

প্রতারিত: ছেলে কোলে লিপুরানি। নিজস্ব চিত্র

এক উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধে। ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়ার পেটবিন্ধি পঞ্চায়েতের মহাপাল গ্রামের এই ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসকদলের নেতৃত্ব। প্রশাসনিক মহলে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন লিপুরানি কামিল্যা নামে ওই উপভোক্তা।

Advertisement

পঞ্চায়েতের বিভিন্ন পরিষেবার বিনিময়ে উপভোক্তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার অভিযোগে শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রায়ই সরব হন বিরোধীরা। লিপুদেবীর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে পড়ছে শাসক দল। কারণ, পেটবিন্ধি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কালিপদ সুর হলেন বেলিয়াবেড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি।

মহাপাল গ্রামের বাসিন্দা গৃহবধূ লিপুরানিদেবীর স্বামী মিহির কামিল্যা পেশায় চাষি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় স্থানীয় পেটবিন্ধি গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফ থেকে লিপুদেবীর নামে বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মঞ্জুর হয়। প্রথম দফায় গত ২৪ এপ্রিল পঞ্জাব ন্যাশন্যাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি)-এর মহাপাল শাখায় লিপুদেবীর অ্যাকাউন্টে ৪২ হাজার টাকা জমা পড়ে।

Advertisement

লিপুদেবীর অভিযোগ, টাকা জমা পড়ার কয়েকদিন পরে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা সারথী কামিল্যার স্বামী রঞ্জিত কামিল্যা তাঁর বাড়িতে হাজির হন। উপভোক্তা তালিকায় নামের গরমিল রয়েছে জানিয়ে পিএনবি-র পাসবইটি রঞ্জিতবাবু নিয়ে যান বলে লিপুদেবীর দাবি। লিপুদেবীকে ৪ মে ব্যাঙ্কে যেতে বলেন রঞ্জিতবাবু। অভিযোগ, একটি ‘উইথড্রয়াল স্লিপ’-এ লিপুদেবীকে সই করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন তিনি। পরে পাসবইটি হারিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেন রঞ্জিতবাবু। কী ভাবে পাসবই হারিয়ে গেল, সেই প্রশ্ন তোলেন মুকুলবাবু।

লিপুদেবীর দাবি, তকাতর্কির পরে অবশ্য পাসবই ফেরত দেন রঞ্জিতবাবু। ব্যাঙ্কে গিয়ে সেই পাসবই আপডেট করিয়ে দেখা যায়, ৪ মে লিপুদেবীর অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপর লিপুদেবী ৮ মে বেলিয়াবেড়ার বিডিও কৌশিক ঘোষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। বেলিয়াবেড়া থানা অভিযোগ জমা না-নেওয়ায় ডাকযোগে থানায় অভিযোগপত্র পাঠান লিপুদেবী। লিপুদেবী বলেন, “প্রশাসনিক মহলে অভিযোগ জানানোয় শাসক দলের লোকজন হুমকি দেওয়া শুরু করেছেন।”

পিএনবি-র মহাপাল শাখার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন লিপুদেবী। ব্যাঙ্কের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখারও আবেদন জানিয়েছেন তিনি। পিএনবি মহাপাল শাখার ম্যানেজার পীযূষকান্তি মণ্ডল বলেন, “ওই মহিলা বিষয়টি জানিয়েছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।”

অভিযুক্ত রঞ্জিতবাবু ও তাঁর স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্যা সারথীদেবী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রঞ্জিতবাবুর দাবি, “এমন ঘটনাই ঘটেনি। ওই মহিলা কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।” পেটবিন্ধি পঞ্চায়েতের প্রধান কালিপদ সুর বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নেব।” বিডিও কৌশিক ঘোষ বলেন, “বিষয়টি ব্যাঙ্কের এক্তিয়ারভুক্ত। ওই মহিলাকে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে বলেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement